OrdinaryITPostAd

বায়োমিল ১ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া - বায়োমিল ১, ২ খাওয়ার নিয়ম

বায়োমিল ১ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে অনেকে চিন্তিত। বায়োমিল ১ শিশুর জন্য যেমন উপকারী তেমনি অতিরিক্ত মাত্রায় শিশুকে খাওয়ালে বেশ কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। বায়োমিল ২ খাওয়ার নিয়ম, বায়োমিল ১, ২ সম্পর্কে প্রত্যেকটি প্রশ্নের উত্তর থাকছে আজকের আর্টিকেলটিতে।
বায়োমিল ১ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া - বায়োমিল ২ খাওয়ার নিয়ম
বায়োমিল একটি জনপ্রিয় ইনফ্যান্ট ফর্মুলা দুধ। এই দুধ মায়ের দুধের বিকল্প হিসেবে ব্যবহারিত হয়। বায়োমিল দুধে রয়েছে শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান। তবে বায়োমিল ১ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া গুলো জেনে শিশুকে খাওয়ানো উচিত। নতুবা বেশ কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। বায়োমিল ২ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানা থাকলে আপনি সহজেই শিশুকে বায়োমিল ফর্মুলা দুধ খাওয়াতে পারেন। তাই বায়োমিল ফর্মুলা দুধ সম্পর্কে প্রত্যেকটি বিষয় জানতে পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

পোস্ট সূচিপত্রঃ বায়োমিল ১ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া - বায়োমিল ২ খাওয়ার নিয়ম

.

বায়োমিল কি শিশুর জন্য ভালো

অনেকে নিয়মিত জিজ্ঞাসা করেন বায়োমিল ফর্মুলা দুধ শিশুর জন্য ভালো কিনা। বায়োমিল ফর্মুলা দুধ শিশুর জন্য বেশ উপকারী। বায়োমিল ফর্মুলা দুধে রয়েছে শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান। এ দুধে থাকা পুষ্টি উপাদান শিশুকে নীরোগ ভাবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করে। বায়োমিল দুধে থাকা পুষ্টি উপাদান শিশুর শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। 
বায়োমিল ১ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া - বায়োমিল ২ খাওয়ার নিয়ম
শিশু সহজে মায়ের দুধের বিকল্প হিসেবে এই দুধ খেয়ে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান পায়। বিশেষ করে বায়োমিল দুধ মাতৃদুগ্ধের বিকল্প হিসেবে চিকিৎসকরা শিশুকে খাওয়ানোর পরামর্শ দেন। যদি শিশুর দুর্বল হয়, শারীরিক ওজন অনেক কম হয়, হৃষ্টপৃষ্ঠ না হয়, নিয়মিত রোগে আক্রান্ত হয়, সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা শিশুকে বায়োমিল ১ অথবা ২ খাওয়ানোর পরামর্শ দেন। 
বায়োমিল ফর্মুলা দুধ শিশুর জন্য ভালো। তবে সঠিক মাত্রায় এই দুধ শিশুকে খাওয়ানো প্রয়োজন। নতুবা উপকারের চাইতে অপকার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।

বায়োমিল ১ বানানোর নিয়ম

বায়োমিল ১ বানানোর নিয়ম ও বায়োমিল ২ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। বায়োমিল ১ বানানোর নিয়ম অনেক সহজ। অন্যান্য ফর্মুলা দুধের মতোই আপনি খুব সহজেই বায়োমিল ১ ফর্মুলা দুধ কয়েক মিনিটের মধ্যেই তৈরি করতে পারবেন। বায়োমিল ১ বানানোর জন্য প্রথমে আপনার হাত হালকা ফুটন্ত গরম পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিন। 

এরপর শিশুর জন্য যে ফিডারে দুধ তৈরি করবেন সেই ফিডার হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। বায়োমিল ১ বানানোর জন্য উষ্ণ গরম পানি (কিন্তু ফুটন্ত নয়) পরিমাণ মতো নিন। প্রতি ৩০ মিলি পানির জন্য এক চামচ বায়োমিল ফর্মুলা দুধ মেশান। শিশুর বয়স অনুযায়ী এটি দিনের ভিন্ন ভিন্ন অংশে খাওয়াতে হবে। এরপর ফিডারে দুধ ও পরিমাণ মতো পানি ভালোভাবে ঝাঁকিয়ে নিন। 

পানির উষ্ণতা সম্পর্কে জানতে নিজের হাতের তালুতে অথবা হাতের উপরের অংশে দু-এক ফোঁটা দুধ নিন। তাপমাত্রা সহনীয় হলে আপনার শিশুকে খাওয়াতে পারেন। অতিরিক্ত গরম থাকলে হালকা ঠান্ডা হওয়ার পর শিশুকে খাওয়ান। এভাবে আপনি বায়োমিল ১ দুধ সহজেই বানাতে পারবেন।

বায়োমিল ১ খাওয়ার নিয়ম

বায়োমিল ১ খাওয়ার নিয়ম অনেক সহজ। তবে বায়োমিল ১ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া জানার পর ওই সিদ্ধান্ত নিন আপনি এটি শিশুকে খাওয়াবেন কিনা। বায়োমিল ১ শিশু অতিরিক্ত দুর্বল হলে মাতৃদুগ্ধ না পেলে চিকিৎসকেরা শিশুকে এই দুধ খাওয়ানোর পরামর্শ দেন। সঠিক নিয়ম মেনে বায়োমিল ১ শিশুকে খাওয়ালে কোন প্রকার সমস্যার সম্মুখীন হবেন না। 

কেননা এটি পরীক্ষিত ও যাচাই করার পরেই বাজারজাত করা হয়েছে। বায়োমিল ১ ০-৬ মাস বয়সের শিশুকে খাওয়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। আপনার শিশুর বয়স শূন্য থেকে ছয় মাস পর্যন্ত বায়োমিল ১ খাওয়াতে পারবেন। বায়োমিল ১ ফর্মুলা দুধ প্রতি ৩০ মিলি পানিতে এক চামচ পরিমাণ মিশাতে হয়। নিচে বয়স অনুযায়ী বায়োমিল ১ তৈরি ও খাওয়ানোর নিয়ম দেওয়া হলঃ
  • প্রথম মাসে ৯০ মিলি করে ২৪ ঘন্টায় ৬ বার
  • দ্বিতীয় মাসে ১২০ মিলি করে ২৪ ঘন্টায় ৫ বার
  • তৃতীয় মাসে ১৫০ মিলি করে ২৪ ঘন্টায় ৫ বার
  • চতুর্থ মাসে ১৮০ মিলি করে ২৪ ঘন্টায় ৫ বার
  • পঞ্চম ও ষষ্ঠ মাসে ২১০ মিলি করে ২৪ ঘন্টায় ৫ বার
প্রতি ৩০ মিলি পানির জন্য ১ চামচ বায়োমিল ১ মেশাবেন। কখনোই মাত্রাতিরিক্ত ফর্মুলা দুধ মেশাবেন না। যেমন ৯০ মিলি পানিতে ৩ চামচ বায়োমিল ১ মিশাতে হবে। আবার ২১০ মিলিতে ৭ চামচ বায়োমিল ১ মিশাতে হবে। শিশুকে কখনোই অতিরিক্ত ফর্মুলা দুধ খাওয়াবেন না এতে সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। শিশুকে কিছু সময় বিরতি দিয়ে বারবার দুধ খাওয়ান। একসঙ্গে কখনো অতিরিক্ত করে দুধ খাওয়াবেন না। এতে শিশুর বদহজম, পেট ফাঁপা, অথবা এলার্জির মত সমস্যা দেখা দিতে পারে।

বায়োমিল ২ খাওয়ার নিয়ম

বায়োমিল ২ খাওয়ার নিয়ম অনেকেই জানেন না। শিশুকে সঠিক নিয়মে বায়োমিল না খাওয়ালে এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হতে পারেন। তাই বায়োমিল ২ খাওয়ানোর নিয়ম জেনে শিশুকে বায়োমিল ২ সঠিকভাবে খাওয়াবেন। বায়োমিল ১ ও ২ ফর্মুলা দুধ শিশুকে খাওয়ানোর নিয়ম একই। বায়োমিল ২ ফর্মুলা দুধ ৬-১২ মাস বয়সের শিশুকে খাওয়াতে হয়। 

চিকিৎসকেরা ৬-১২ মাস বয়সের শিশুকে বায়োমিল ২ খাওয়ানোর পরামর্শ দেন। প্রতি ৩০ মিলি উষ্ণ গরম পানিতে এক চামচ বায়োমিল পাউডার মেশাবেন। নিচে ৬-১২ মাস বয়সের শিশুর বায়োমিল ২ খাওয়ার নিয়ম হলো ২১০ মিলি পানিতে ৭ চামচ বায়োমিল ২ পাউডার মেশান এভাবে ২৪ ঘন্টায় ৫-৬ বার খাওয়াতে পারেন। কখনোই অতিরিক্ত মাত্রায় শিশুকে বায়োমিল ২ খাওয়াবেন না। 

শিশুর শারীরিক গঠন ওজনের ওপর ভিত্তি করে খাবারের চাহিদা কিছুটা কম ও বেশি হতে পারে। তাই সবচেয়ে ভালো হয় একজন শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে শিশুকে বায়োমিল ২ খাওয়ালে। তবে আপনি উপরে দেওয়া নিয়ম অনুযায়ী ২৪ ঘন্টায় ৫-৬ বার বায়োমিল ২ খাওয়াতে পারেন। আশা করি বায়োমিল ২ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়েছেন।

বায়োমিল ১ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

বায়োমিল ১ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে আগে থেকে জানে থাকা শিশুর বাবা মার জন্য অত্যন্ত জরুরী। বায়োমিল ১ এর তেমন কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। তবে কিছু কিছু শিশুর ক্ষেত্রে বায়োমিল ১ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তীব্র হতে পারে। বায়োমিল ১ সঠিক নিয়মে শিশুকে খাওয়ালে কোন প্রকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্মুখীন হবেন না। 

তবে মাত্রাতিরিক্ত অথবা বেশি পরিমাণে শিশুকে বায়োমিল ১ খাওয়ালে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হতে পারেন। তাই অবশ্যই বায়োমিল ১ এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়ে সচেতনতা বাড়ানো দরকার। কেননা নবজাতকের সঠিকভাবে যত্ন না নিলে বড় ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। বায়োমিল ১ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া গুলো হলোঃ
  • শিশুর পেট ফাঁপা দেখা দিতে পারে
  • হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে
  • বদ হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে
  • শিশুর বমি হতে পারে
  • কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা তৈরি হয়
  • এলার্জির সমস্যা বৃদ্ধি পেতে পারে
  • শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে
  • শারীরিক ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে
  • নিয়মিত পেট খারাপ হতে পারে
এই সমস্যাগুলো খুবই বিরল তবে মাত্রাতিরিক্ত অথবা অতিরিক্ত মাত্রায় শিশুকে বায়োমিল ১ খাওয়ালে উপরে দেওয়া এই সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে। আপনার শিশুর উপরে দেওয়া এই লক্ষণ গুলো দেখা দিলে অবশ্যই একজন শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন। আশা করি বায়োমিল ১ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়েছেন৷

বায়োমিল ১ দাম ২০২৫

বিগত বছরের তুলনায় ২০২৫ সালে বায়োমিল ১ এর দাম কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশের প্রত্যেকটি অঞ্চলেই ফার্মেসি এবং মুদির দোকান গুলোতে ফর্মুলা দুধ গুলো পাওয়া যায়। ভিন্ন ভিন্ন দোকান গুলোতে এই ফর্মুলা দুধের দাম কিছুটা কম বেশি হতে পারে। এছাড়া ঘরে বসে সহজে অনলাইন প্লাটফর্মে আপনি বায়োমিল ১ কিনতে পারবেন। 

বায়োমিল ১ ওজনের ওপর ভিত্তি করে দাম নির্ধারিত হয়। বাজারে বেশ কিছু ওজনের বায়োমিল ১ ফর্মুলা দুধ পাওয়া যায়। নিচে বায়োমিল ১ ফর্মুলা দুধ এর দাম দেওয়া হলঃ
  • বায়োমিল ১ ১৮০ গ্রাম দুধের দাম ২৭৫ টাকা
  • বায়োমিল ১ ৩৬০ গ্রাম দুধের দাম ৪৮০ টাকা
  • বায়োমিল ১ ৫০০ গ্রাম দুধের দাম ৮৫০ টাকা
  • বায়োমিল ১ ১০০০ গ্রাম দুধের দাম ১৭৬০ টাকা
তবে সময় ও স্থানভেদে বায়োমিল ১ দুধের দাম কিছুটা কম বেশি হতে পারে। তাই আপনি বায়োমিল ১ ফর্মুলা দুধ কেনার পূর্বে অবশ্যই অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, মুদির দোকান, ফার্মেসি দোকান যাচাই করার পর কিনবেন। আশা করি সাশ্রয়ী মূল্যে বায়োমিল ১ কিনতে পারবেন।

বায়োমিল ১ কোন কোম্পানির

বায়োমিল ১ বাইরের দেশে উৎপাদন করা হয়। বায়োমিল ১ মূলত বেলজিয়াম প্রস্তুত করা হয়। বাংলাদেশের বেশ কিছু কোম্পানি আমদানি করে বাজারজাত করে। আমদানির উপর ভিত্তি করে এর মূল্য নির্ধারণ করা হয়। বায়োমিল ১ এটি বেলজিয়াম ভিত্তিক কোম্পানি৷

লেখক এর মন্তব্য

বায়োমিল ১ এর যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি এর অপকারিতাও রয়েছে। তাই বায়োমিল ১ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তবে কখনোই এটি শিশুকে অতিরিক্ত মাত্রায় খাওয়াবেন না। আজকের পুরো আর্টিকেলটিতে বায়োমিল সম্পর্কে প্রত্যেকটি প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিয়েছি। আশা করি বিষয়গুলো জেনে উপকৃত হবেন। 

আর্টিকেলটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন। নিয়মিত এরকম গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন