মুখে ব্রণ কমানোর সেরা ১০টি উপায়
আপনি কি মুখে ব্রণ কমানোর উপায় সম্পর্কে খুঁজছেন? তাহলে সঠিক জায়গায় এসেছেন, এই আর্টিকেলটিতে কিভাবে আপনি খুব সহজে মুখের ব্রণ অল্প কিছুদিনের কমিয়ে ফেলবেন, মুখে ব্রণ কেন হয়, মুখে ব্রণ হলে কি মাখবেন এছাড়া মুখে ব্রণ হওয়ার বিভিন্ন কারণ ও নিরাময়ের উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত থাকছে।
ছেলে মেয়ে প্রত্যেকেরই ব্রণ একটি কমন সমস্যা। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পূর্বে এ সমস্যা থাকে না প্রাপ্তবয়স্ক হলেই এ সমস্যা দেখা দেয়। মুখে ব্রণ কমানোর উপায়, মুখে ব্রণ কেন হয় দ্রুত ভালো করার উপায় সম্পর্কে চলুন বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
পোস্ট সূচিপত্রঃ মুখে ব্রণ কমানোর উপায় - মুখে ব্রণ হওয়ার কারণ
.
মুখে ব্রণ হওয়ার কারণ
মুখে ব্রণ কেন হয় অনেকেই জানেন না, মুখে ব্রণ হওয়ার বিভিন্ন কারণ রয়েছে। একাধিক কারণে মুখে ব্রণ হয়। ব্রণ হলে কি করবেন? ব্রণ ভালো করার জন্য যে উপায় অনুসরণ করলে দ্রুত ব্রণ ভালো করতে পারবেন। যাদের মুখে অতিরিক্ত গ্রহণ হয় তারা মুখে ব্রণ কমানোর উপায় অনুসরণ করলে দ্রুত ব্রণ কমাতে পারবেন। মুখে ব্রণ হওয়ার কারণগুলো নিচে দেওয়া হলঃ
- বংশগত কারণ
- পরিবেশগত কারণ
- অনিদ্রা
- হরমোন জনিত কারণ
- জীবনযাত্রার প্রভাব
- মানসিক চিন্তাভাবনা
- নিম্নমানের প্রসাধনী
- মুখে অতিরিক্ত প্রসাধনী ব্যবহার
বংশগত কারণঃ বংশগত কারণে মুখে ব্রণ হয়, মুখে ব্রণ হওয়ার কারণ গুলোর মধ্যে একটি হলো বংশগত প্রভাব। বাবা অথবা মা বা বংশপরম্পরায় অন্য কারো যদি মুখে ব্রণ থাকে সে ক্ষেত্রে মুখে ব্রণ হয়।
পরিবেশগত কারণঃ পরিবেশ কত কারণে মুখে ব্রণ হয়। আপনি যে পরিবেশে থাকেন নোংরা দূষিত, ধুলোবালি যুক্ত, অতিরিক্ত তাপমাত্রা যুক্ত পরিবেশে থাকলে ব্রণ হয়।
অনিদ্রাঃ যারা ঘুমের সময় মেন্টেন করেন না, রাতে ঘুমাতে দেরি করেন। কোনদিন রাতে 9 টায় ঘুমান কোনদিন রাতে 12 ঘুমান এভাবে ঘুমালে মুখে ব্রণ হয়।
হরমোন জনিত কারণঃ বয়সন্ধিকালে প্রাপ্তবয়স্ক হলে শরীরে এন্ড্রোজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। শরীরে এন্ড্রোজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে মুখ নাকে ব্রণ হয়।
জীবনযাত্রার প্রভাবঃ মুখে ব্রণ হওয়ার কারণ জীবনযাত্রার প্রভাব। নিয়মিত ধূমপান গ্রহণ করলে, অ্যালকোহল জাতীয় খাবার গ্রহণ করলে, নিয়মিত অনিদ্রায় ভুগলে মুখে ব্রণ দেখা দেয়।
মানসিক চিন্তাভাবনাঃ মানসিক চিন্তাভাবনা মুখে ব্রণ হওয়ার অন্যতম কারণ। আপনি সবসময় অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা করলে মুখে ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
নিম্নমানের প্রসাধনীঃ নিম্নমানের প্রসাধনী ব্রণ হওয়ার জন্য দায়ী। বিভিন্ন নিম্নমানের কোম্পানির প্রসাধনী মুখে ও তকে ব্যবহারের ফলে ব্রণ হয়।
মুখে অতিরিক্ত প্রসাধনী ব্যবহারঃ ভালো হোক অথবা খারাপ হোক যেকোনো প্রসাধনী মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার করলে এর ক্ষতিকর প্রভাব দেখতে পাওয়া যায়। মুখে একাধিকবার অতিরিক্ত প্রসাধনী ব্যবহারের ফলে বৃদ্ধি পায়।
মুখে ব্রণ হলে কি মাখা উচিত ঘরোয়া উপায়
মুখে ব্রণ হলে ঘরোয়া বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করে মুখের ব্রণ কে নিয়ন্ত্রণে রাখতে ও দূর করতে পারবেন। যাদের মুখে অতিরিক্ত ব্রণের সমস্যা রয়েছে তারা এই ঘরোয়া উপায় গুলো অনুসরণ করতে পারেন।
খাঁটি দুধের সরঃ মুখে ব্রণ কমানোর উপায় গুলোর মধ্যে দুধের সর অত্যন্ত উপকারী। প্রতিদিন মুখে গোসলের ১৫ থেকে ২০ মিনিট পূর্বে ফেস মাস্ক হিসেবে ব্যবহার করুন। এরপর আলতো ভাবে ঘষে ধুয়ে পরিষ্কার করে ধুয়ে ফেলুন।
মধুঃ ব্রণের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি উপাদান মধু। মজুতে রয়েছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল যা ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করতে কাজ করে। তাই আপনি নিয়মিত মুখে এক চামচ মধু লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
টক দইঃ মুখে ব্রণ কমানোর উপায় গুলোর মধ্যে একটি হলো টক দই। যাদের মুখে তেল তেলে ভাবের জন্য ব্রণ হয়েছে তারা টক দই মুখে ব্যবহার করতে পারেন। টক দই মুখে ব্যবহারের ফলে ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করতে সাহায্য করবে।
হলুদঃ কাঁচা হলুদের রয়েছে অ্যান্টিসেপটিক উপাদান যা ত্বককে পরিষ্কার রাখে। হলুদের পেস্ট তৈরি করুন এরপর নিয়মিত মুখে এই পেস্ট লাগিয়ে 15 থেকে 20 মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
অ্যালোভেরা জেলঃ মুখে ব্রণ কমানোর উপায় গুলোর মধ্যে অ্যালোভেরা জেল ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এলোভেরা জেল ত্বকের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। গাছ থেকে অ্যালোভেরা সংগ্রহ করুন। এরপর এলোভেরা জেল মুখে লাগিয়ে 15 মিনিট পর আলতো ঘোষে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে নিয়মিত উল্লেখিত উপাদান গুলো প্রাকৃতিক উপায় ব্যবহার করে মুখের ব্রণ দূর করতে পারবেন।
মুখে ব্রণ কমানোর উপায়
মুখের ব্রণ কমানোর অনেক উপায় রয়েছে আপনি চাইলে ঘরোয়া উপায়ে, ট্রিটমেন্ট করে, ক্রিম ব্যবহার করে মুখের ব্রণ দূর করতে পারবেন। মুখে ব্রণ কমানোর জন্য ঘরোয়া উপায় গুলোর মধ্যে মধু, টক দই, কাঁচা হলুদ, লেবুর রস, অ্যালোভেরা জেল, অ্যাপেল সিডার ভিনেগার, দারুচিনি অত্যন্ত উপকারী।
আপনি এই উপাদান গুলোর মাধ্যমে খুব সহজেই নিয়মিত মুখে পেস্ট হিসেবে ব্যবহার করে মুখের ব্রণ কমাতে পারবেন। তাছাড়া ট্রিটমেন্ট করে মুখের ব্রণ কমানো যায়। মুখের ব্রণ কমানোর উপায় গুলোর মধ্যে একটি হলো এন্টিবায়োটিক ক্রিম। মুখে এন্টিবায়োটিক ক্রিম ব্যবহারের ফলে ব্রণ কমানো যায়। এছাড়া ব্রণের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়, বেঞ্জয়েল পারক্সাইড,
সালিসাইলিক অ্যাসিড, এন্টিবায়োটিক ক্রিম, ওরাল এন্টিবায়োটিক, এই ক্রিমগুলো ব্রণের সংক্রমণ বেশি হলে চিকিৎসকের ব্যবহারের পরামর্শ দেন। তাই আপনি ট্রিটমেন্ট এর মাধ্যমে ক্রিম ব্যবহার করে দ্রুত মুখের ব্রণ কমাতে পারবেন। প্রিয় পাঠক আশা করি মুখে ব্রণ কমানোর উপায় সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়েছেন।
মুখে ব্রণ হলে কি মাখা উচিত
মুখে ব্রণ হলে প্রাকৃতিক উপায়ে বিভিন্ন উপাদান মুখে মাখুন। প্রাকৃতিক ও ঘরোয়া উপায় গুলোর মধ্যে খাঁটি দুধের সর, দারুচিনি, টক দই, মধু, এলোভেরা জেল, অ্যাপেল সিডার ভিনেগার, লেবুর রস, নিয়মিত মুখে পেস্ট হিসেবে ব্যবহার করে ধুয়ে ফেলুন। প্রাকৃতিকভাবে ঘরোয়া উপায় অনুসরণ করার পরেও যদি মুখের ব্রণ ভালো না হয় সেক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিক ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন, ব্রণের জন্য এন্টিবায়োটিক ক্রিম, ওরাল এন্টিবায়োটিক অত্যন্ত উপকারী।
মেয়েদের মুখে ব্রণ কেন হয়
মেয়েদের মুখে ব্রণ হওয়ার বিভিন্ন কারণ রয়েছে। হর*মোন জনিত কারণে মেয়েদের মুখে ব্রণ হয় মা*সিক চক্র চলাকালীন সময়ে মেয়েদের ব্রণ হয়। অতিরিক্ত তেল চর্বি জাতীয় খাবার গ্রহণ করলে মুখে ব্রণ হয়। যাদের মুখমণ্ডলে সব সময় তৈলাক্ত ভাব থাকে তাদের ব্রণের পরিমাণ সবচাইতে বেশি হয়। কোন মেয়ে যদি অতিরিক্ত মান মানসিক চাপের মধ্যে ভোগে চিন্তাভাবনা টেনশন করতেই থাকে সেক্ষেত্রে ব্রণের সম্ভাবনায় বৃদ্ধি পায়।
এছাড়া স্কিনের জন্য উপযুক্ত নয় এরকম প্রসাধনী সামগ্রী ব্যবহারে মুখে ব্রণ বৃদ্ধি পায়। অনিদ্রা, তেল ও চর্বিযুক্ত খাবার, মিষ্টি জাতীয় খাবার, দুগ্ধজাত খাবার, মেয়েদের মুখে ব্রণ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।
কোন ভিটামিনের অভাবে মুখে ব্রণ হয়
শরীরে প্রয়োজনীয় কিছু ভিটামিনের ঘাটতি দেখা দিলে মুখে ব্রণের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। মুখে ব্রণ কমানোর উপায় এই ভিটামিন গুলো গ্রহণ করা। ভিটামিন এ ত্বকের প্রদাহ কমায়, ভিটামিন ডি এর অভাব হলে ত্বকের ব্রণ বৃদ্ধি হয়। ভিটামিন ডি ত্বকের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবার ত্বকের কোষের ক্ষয় রোধ করে। ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের অভাবে ত্বকের তুমি লাগতো ভাব বৃদ্ধি পায় হলে মুখে ব্রণ দেখা দেয়। তাই মুখে ব্রণের সমস্যা দূর করতে উল্লেখিত ভিটামিন ঔষধ অথবা ভিটামিন যুক্ত খাবার গ্রহণ করুন।
আরো পড়ুনঃ লেবু দিয়ে মুখের কালো দাগ দূর করার উপায়
মুখে ব্রণ হলে কি কি খাবার খাওয়া উচিত
মুখে ব্রণ হলে কিছু খাবার গ্রহণ করলে মুখের ব্রণ কন্ট্রোলে রাখা যায়। তবে খাদ্যাভ্যাস সহ সবকিছু সঠিক নিয়ম মেনে চললে দ্রুত মুখের ব্রণ দূর করতে পারবেন। মুখে ব্রণ কমানোর উপায় ত্বক পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা। পাশাপাশি ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া। ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার গুলোর মধ্যে ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ খাবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফল ও সবজি, বিভিন্ন ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার, জিংক সমৃদ্ধ খাবার, ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার অন্যতম।
এই ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার গুলোর মধ্যে মাছ, চিয়া সিড, পালং শাক, ব্রুকলি, গাজর, কমলা, লেবু, পেঁপে, আমলকি, ওটস, ব্রাউন রাইস, সাথে প্রচুর পরিমাণে পরিষ্কার পানি খেতে পারেন। উল্লেখিত খাবার গুলো খেলে আশা করি মুখের ব্রণ দূর করতে পারবেন।
লেখক এর মন্তব্য
মুখে ব্রণ কমানোর উপায়, মুখে ব্রণ হওয়ার কারণ সম্পর্কে অনেকে জিজ্ঞাসা করেন, আজকের আর্টিকেলটি তাদের উদ্দেশ্যে লিখা। মুখে ব্রণ সম্পর্কিত প্রত্যেকটি সঠিক তথ্য আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি। আশা করি বিষয়গুলো জেনে উপকৃত হবেন। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।
নিয়মিত এরকম গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। রূপচর্চায়, লাইফ স্টাইল, সম্পর্কিত অন্যান্য আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটে ক্যাটাগরি গুলো ঘুরে আসুন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।