বড়দের গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহারের নিয়ম - গ্লিসারিন সাপোজিটরি ডোজ

বড়দের গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহারের নিয়ম সবচাইতে সোজা। আপনি এক থেকে দুই মিনিটের মধ্যেই এ সাপোজিটরি একা একা ব্যবহার করতে পারবেন। গ্লিসারিন সাপোজিটরি ডোজ বয়স অনুযায়ী কিভাবে ব্যবহার করবেন। গর্ভাবস্থায় সাপোজিটরি ব্যবহার করা যাবে কিনা। গ্লিসারিন সাপোজিটরি সম্পর্কে প্রত্যেকটি বিষয় থাকছে আজকের আর্টিকেলটিতে।
বড়দের গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহারের নিয়ম - গ্লিসারিন সাপোজিটরি ডোজ
অনিয়মিত কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু যারা কখনো এ সাপোটারি ব্যবহার করেননি তারা এই সাপোটার ব্যবহার সম্পর্কে জানেন না। এর কাজ সম্পর্কে জানেন না। বড়দের গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহারের নিয়ম, গ্লিসারিন সাপোজিটরি ডোজ, গ্লিসারিন সাপোজিটরি সম্পর্কে জানতে হলে পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

পোস্ট সূচিপত্রঃ বড়দের গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহারের নিয়ম - গ্লিসারিন সাপোজিটরি ডোজ

.

গ্লিসারিন সাপোজিটরি কাজ

গ্লিসারিন সাপোজিটরির মূল কাজ অন্ত্রের গতি বৃদ্ধি করা। শিশু থেকে বয়স্ক পর্যন্ত প্রত্যেকটি ব্যক্তির ক্ষেত্রেই গ্লিসারিন সাপোজিটরের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। যারা অনিয়মিত কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগেন তাদেরকে এই গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়। গ্লিসারিন সাপোজিটরি কাজ কোষ্ঠকাঠিন্য কে দূর করে মলত্যাগ করতে সাহায্য করা। 
বড়দের গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহারের নিয়ম - গ্লিসারিন সাপোজিটরি ডোজ
গ্লিসারিন সাপোজিটরি মূলত একটি হাইপারওসমোটিক লেক্সাটিভ যা কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় ভোগা রোগীদের পায়ুপথে ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া হয়। গ্লিসারিন সাপোজিটরি পায় পথে ব্যবহার করলে পার্শ্ববর্তী টিস্যু থেকে পানি শুষে মলকে নরম করে। পায়ুপথে এ সাপোজিটরি ব্যবহারের ১৫ মিনিট থেকে এক ঘণ্টার মধ্যেই মাল নরম হয় ফলে অন্ত্রের গতি বৃদ্ধি পায়। রোগী ১৫ মিনিট থেকে এক ঘণ্টার মধ্যেই মলত্যাগ করে।

বড়দের গ্লিসারিন সাপোজিটরি

বড়দের গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহারের নিয়ম অনেক সোজা। বড়দের গ্লিসারিন সাপোজিটরি কোনগুলো ব্যবহার করবেন? ছয় বছর থেকে প্রাপ্তবয়স্ক পর্যন্ত ব্যক্তিরা গ্লিসারিন সাপোজিটরি ২.৩০ ব্যবহার করুন। বড়দের জন্য গ্লিসারিন সাপোজিটরি ২.৩০ ব্যবহার করুন। অনিয়মিত কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য ২.৩০ সাপোজিটরি পায়ুপথে ব্যবহার করতে হয়। আপনি যদি হঠাৎ কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন সে ক্ষেত্রে বড়দের গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহার করতে পারেন। নিয়মিত কোষ্ঠকাঠিন্য হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

বড়দের গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহারের নিয়ম

অনেকে আছেন হঠাৎ করে কোষ্ঠকাঠিন্যের সম্মুখীন হন। টয়লেটে আধা ঘন্টার বেশি সময় অতিক্রম করার পরও মলত্যাগ করতে পারেন না। তারা এই অনিয়মিত কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহার করুন। গ্লিসারিন সাপোজিটরিতে হাইপারওসমোটিক লেক্সাটিভ রয়েছে যা পায়ু পথে ব্যবহার করলে পায়ুপথের পার্শ্ববর্তী টিস্যু থেকে পানি শোষণ করে মন নরম করে ফলে রোগী দ্রুত মলত্যাগ করতে সক্ষময়। বড়দের গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহারের নিয়ম নিচে দেওয়া হলঃ
  • ২ বছরের নিচে শিশুদের ক্ষেত্রে ১ গ্রাম দিনে একবার
  • ২-৬ বছরের শিশুদের ক্ষেত্রে ১.৫ গ্রাম দিনে একবার
  • ৬ বছরের ঊর্ধ্বে ২.৩০ গ্রাম দিনে একবার
বড়দের গ্লিসারিন সাপোজিটরি ২.৩০ গ্রাম দিনে একবার ব্যবহার করুন। আশানুরূপ ফলাফল না পেলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী একাধিকবার ব্যবহার করতে পারেন। প্রথমে সাপোজিটরি ফ্রিজের নরমাল টেম্পারেচারে ১০ মিনিট রেখে দিন। এর আবরণ হালকা শক্ত হয়ে গেলে তারপর মোরগ থেকে আলাদা করুন। এরপর বাম হাতের দুই আঙ্গুল দিয়ে আলতোভাবে সাপোজিটরি চেপে ধরে পায়ুপথে প্রবেশ করান। 

সাপোজিটরি গলে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। অল্প কিছুক্ষণ পর যদি সাপোজিটরি বের হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে পুনরায় ব্যবহার করবেন না। সাপোজিটরি পায়ুপথে প্রবেশ করানোর অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই অন্ত্রের গতি বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে আপনি মলত্যাগ করতে পারবেন। প্রিয় পাঠক আশা করি বড়দের সাপোজিটরি ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়েছেন।

গ্লিসারিন সাপোজিটরি ডোজ

গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহারের ডোজ সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। বয়স অনুযায়ী গ্লিসারিন সাপোজিটরি ডোজ ব্যবহার করতে হয়। কখনোই বয়স অনুপাতে সর্বোচ্চ ডোজ ব্যবহার করা উচিত নয়। এতে সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন।
  • ২ বছরের শিশুদের ক্ষেত্রে গ্লিসারিন সাপোজিটরি দিনে একবার ব্যবহার করুন
  • ২-৬ বছরের শিশুদের ক্ষেত্রে গ্লিসারিন সাপোজিটরি ১.১৫ দিনে একবার
  • ৬ বছরের ঊর্ধ্বে ও প্রাপ্তবয়স্করা ২.৩০ দিনে একবার
গ্লিসারিন সাপোজিটরি সঠিক ডোজ ব্যবহার করুন কখনোই অতিরিক্ত ব্যবহার করবেন না। যদি গ্লিসারেন সাপোজিটরি ব্যবহারের পর আশানুরূপ সঠিক ফলাফল না পান সে ক্ষেত্রে নিকটস্থ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

গর্ভাবস্থায় গ্লিসারিন সাপোজিটরি

গর্ভাবস্থায় কমবেশি প্রত্যেকটি মহিলায় কোষ্ঠকাঠিন্যের সম্মুখীন হন। গর্ভকালীন সময়ে খাবার হজম হতে অসুবিধে হয় পাশাপাশি মল ত্যাগ করতেও সমস্যার সম্মুখীন হন। গর্ভবতী মহিলারা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় গর্ভাবস্থায় গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহার করা যাবে কিনা সে প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করেন। বিভিন্ন কোম্পানির গ্লিসারিন সাপোজিটরি রয়েছে। প্রত্যেকটি সাপোজিটরি গর্ভাবস্থায় ব্যবহার করা যাবে না। 

নির্দিষ্ট কিছু কোম্পানি রয়েছে যে সাপোজিটরি গুলো গর্ভের ভ্রূণের কোন ক্ষতি করে না। আপনি সেই সাপোজিটরি গুলো ব্যবহার করতে পারেন। গর্ভাবস্থায় গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহার করা যাবে। বড়দের গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহারের নিয়ম অনেক সোজা। তবে ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে জেনে নিন কোন কোম্পানির গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহার করবেন।

বড়দের গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহার করা যাবে কি

বড়দের গ্লিসারিন সাপোজিটরি অবশ্যই ব্যবহার করা যাবে। গ্লিসারিন সাপোজিটরি অনিয়মিত কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ব্যবহার করা হয়। বড়দের গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহারের নিয়ম জেনে গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহার করুন। গ্লিসারিন সাপোজিটরি কখনোই নিয়মিত ব্যবহার করবেন না এটি অভ্যাসে পরিণত হবে। গ্লিসারিন সাপোজিটরি অনিয়মিত কোষ্ঠকাঠিন্য ব্যবহার করা হয়। যদি নিয়মিত ব্যবহার করতেই হয় সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শে ব্যবহার করুন।

গ্লিসাপ সাপোজিটরি কেন ব্যবহার করা হয়

গ্লিসার মূলত একটি গ্লিসারিন সাপোটারি। এই সাপোজিটরি অনিয়মিত কোষ্ঠকাঠিন্যের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। গ্লিসার সাপোজিটরি ব্যবহার করে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা যায়। যাদের মল ত্যাগ করতে সমস্যা হয়। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগছেন বিশেষ করে তাদেরকেই চিকিৎসকেরা গ্লিসার সাপ সাপোজিটরে ব্যবহারে পরামর্শ দেন। বয়স অনুযায়ী গ্লিসার সাপোজিটরের ডোজ রয়েছে। 
২-৬ বছরের ঊর্ধ্বে শিশুরা ১.১৫ গ্লিসার সাপোজিটরি ব্যবহার করুন। ৬ বছরের ঊর্ধ্বে প্রাপ্তবয়স্করা ২.৩০ গ্লেস্যাপ সাপোজিটরে ব্যবহার করুন। গ্লিসার সাপোজিটরি মলদ্বারে ব্যবহারের ১৫-৩০ মিনিটের মধ্যেই অন্ত্রের গতি বৃদ্ধি করে ফলে রোগী মলত্যাগ করতে সক্ষম হয়।

গ্লিসারিন সাপোজিটরি দাম কত

বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির গ্লিসারিন সাপোজিটরি পাওয়া যায়। ভিন্ন ভিন্ন কোম্পানির গ্লিসারিন সাপোজিটরের দাম ভিন্ন রকমের। তবে গ্লিসারিন সাপোজিটরের দাম কোম্পানির ভিন্ন তার ক্ষেত্রে খুব একটা কম বেশি নয়। নিচে গ্লিসারিন সাপোজিটরি দাম দেওয়া হলঃ
স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেড এর কিছু গ্লিসার সাপোজিটরের দাম
  • ১ গ্রাম প্রতি ৩৳
  • ১.১৫ গ্রাম প্রতি পিচ ৩.০১৳
  • ২ গ্রাম প্রতি পিচ ৫ ৳
  • ২.৩০ গ্রাম প্রতি পিচ ৫.০২৳
  • ৪ গ্রাম প্রতি পিচ ৮৳

লেখক এর মন্তব্য

বড়দের গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহারের নিয়ম, গ্লিসারিন সাপোজিটরি ডোজ সম্পর্কে অনেকেই জিজ্ঞাসা করেন। আজকের পুরো আর্টিকেলটিতে কিভাবে গ্লিসারিন সাপোজিটরের ব্যবহার করবেন এর ডোজ সম্পর্কে সঠিক ধারণা দিয়েছি। বয়সের চাইতে কখনোই অতিরিক্ত ডোজ ব্যবহার করবেন না। এতে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হতে পারেন। 

গ্লিসারিন সাপোজিটরে ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক হয়ে ব্যবহার করুন। গ্লিসারিন সাপোজিটরি অনিয়মিত কোষ্ঠকাঠিন্যের চিকিৎসায় ব্যবহারিত হয়। কখনোই এটি নিয়মিত চিকিৎসায় ব্যবহার করবেন না তাহলে এটি অভ্যাসে পরিণত হবে। যদি ব্যবহার করতে হয় সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শে ব্যবহার করুন। আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হবেন। 

আর্টিকেলটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন। নিয়মিত এরকম গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। গ্লিসারিন সাপোজিটরি সম্পর্কে অন্যান্য আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটের ক্যাটাগরি ঘুরে আসুন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

প্রিয় টপিকের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url