আয়ুর্বেদিক ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেক, আয়ুর্বেদিক ঔষধ সম্পর্কে বিস্তারিত
আয়ুর্বেদিক ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে একাধিক। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বলতে ক্ষতিকর দিককে বোঝানো হয়। আপনার সুষ্ঠু জ্ঞান থেকে একটু বিবেচনা করে দেখুন কোন কিছুর ভালো দিক থাকলে সেটার খারাপ দিকে রয়েছে হয়তো কম অথবা বেশি।
বাজারে একাধিক আয়ুর্বেদিক ঔষধ পাওয়া যায়। এর মধ্যে কিছু ঔষধ বোতল জাত হিসেবে বিক্রয় করা হয় এবং কিছু ঔষধ কবিরাজি দাওয়াখানা থেকে ঘরোয়া উপায়ে প্রস্তুত করা হয়। তাহলে কোন আয়ুর্বেদিক ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে চলুন বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
পোস্ট সূচিপত্রঃ আয়ুর্বেদিক ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেক, আয়ুর্বেদিক ঔষধ সম্পর্কে বিস্তারিত
.
ভূমিকাঃ
আয়ুর্বেদিক ঔষধ সাধারণত বিভিন্ন ঔষধি গাছ থেকে প্রস্তুত করা হয়। যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে আয়ুর্বেদিক ঔষধ। কিন্তু এই ঔষধি গাছের সাথে বিভিন্ন ধরনের উপাদান মিশ্রিত করে কিছু বিপদজনক ঔষধ প্রস্তুত করা হয় যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
যে ওষুধ সেবন করলে আমাদের স্বাস্থ্যের বিভিন্ন ক্ষতি হয় ও বড় ধরনের রোগ হওয়ার সূত্রপাত হয়। যে আয়ুর্বেদিক ঔষধগুলো সেবন করলে শরীরের বিভিন্ন সমস্যা হয় আজকের আর্টিকেলটিতে এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। বিস্তারিত জানতে হলে পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
আয়ুর্বেদিক ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
অনেকে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় ভালো ফলাফল পাওয়ার জন্য আয়ুর্বেদিক ঔষধ সেবন করেন। হয়তো বা গাছের শেকড় দিয়ে ঘরোয়া ভাবে প্রস্তুতকৃত আয়ুর্বেদিক ঔষধ অথবা বাজারজাত বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানির বোতলজাত প্রস্তুতকৃত আয়ুর্বেদিক ঔষধ। আয়ুর্বেদিক ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে তবে সব আয়ুর্বেদিক ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।
যে ওষুধগুলো ঘরোয়াভাবে শুধুমাত্র ঔষধি গাছের বিভিন্ন অংশ ব্যবহার করে ঘরোয়াভাবে ওষুধ প্রস্তুত করা হয় এই ওষুধগুলোর তেমন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যায় না। তবে অতিরিক্ত মাত্রায় সেবন করলে অন্যান্য সমস্যা হতে পারে। নিয়ম মেনে সেবন করলে এর কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। অন্যদিকে বাজারে যে বোতল জাত আয়ুর্বেদিক ঔষধ গুলো পাওয়া যায় এই ওষুধগুলো পরীক্ষিত নয়।
কোন, কোন ঔষধ আবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তিক ট্রেড নামের ভুয়া কাগজপত্র প্রস্তুত করে জাল কারসাজিতে ঔষধের অনুমোদনের জন্য আবেদন করে। কিন্তু আবেদন মনজুর হওয়ার পূর্বেই তারা বিভিন্ন ওষুধগুলো বাজারে বিভিন্ন ফার্মেসিতে বিক্রয়ের জন্য পাঠিয়ে দেন। এছাড়া ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন ভালো স্বনামধন্য ইউনানী ঔষধ কোম্পানির ছিল লোগো ব্যবহার করছেন যা সাধারণ মানুষের বোঝার কোন উপায় নেই।
বাজারে বিভিন্ন ইউনানী ঔষধ কোম্পানির রুচি বর্ধক, ভিটামিন সিরাপ, রক্ত পরিষ্কারক, খাবারে অনীহা, স্বাস্থ্যবৃদ্ধি, শারীরিক দুর্বলতা, ও বিভিন্ন সমস্যা দূর করার জন্য যেই সিরাপ গুলো বিক্রয় করা হয় তার মধ্যে অধিকাংশ সিরাপ ভেজাল। যা সাধারণ মানুষ কখনো বুঝতে পারে না। ৪৫০ মিলি সিরাপ মাত্র ৩০ টাকায় ফার্মেসিতে পৌঁছে দিচ্ছে। ভুয়া কোম্পানি ভুয়া লাইসেন্স, ও অহেতুক নামের ঔষধ গুলো বিভিন্ন আপেল আঙ্গুর, কমলা,
ও বিভিন্ন ফলমূলের ছবি দেয়া বিভিন্ন আকর্ষণীয় সিরাপ গুলো ভুয়া এই বিষয়ে একটি নিউজ প্রকাশ করা হয় ২০১৯ সালে আজকের desh.com পত্রিকায়। এ প্রতিবেদনে জানানো হয় এই ভেজাল ঔষধ গুলো ফার্মেসী গুলোতে যাতে বিক্রয় না হয় এইজন্য র্যাব-১ ভেজাল বিরোধী অভিযান চালান এবং অনেক ইউনানী ফার্মেসি গুলো বন্ধ করেন।
সবচাইতে বিভিন্ন ফলমূল ও আকর্ষণীয় সিরাপ গুলো বাজারে বিক্রয় হয় এই আয়ুর্বেদিক ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। এই সিরাপ গুলো সেবন করার মাধ্যমে দেখা দিচ্ছে কিডনির বিভিন্ন সমস্যা। কিডনি ড্যামেজ হওয়া থেকে শুরু করে মূত্রথলির বিভিন্ন সমস্যা। স্বাস্থ্য বৃদ্ধির জন্য এই সিরাপ গুলো সেবন করলে শরীরের বিভিন্ন অংশে পানি জমা হয়।
হার্ট স্ট্রোকের ঝুঁকি দেখা দেয় দেখা দেয় হাঁপানি ও শ্বাসকষ্টের মত সমস্যা। রুচি বর্ধক এই ঔষধ গুলো সেবন করলে পেটে অতিরিক্ত গ্যাসের সৃষ্টি হয়, গ্যাস থেকে সৃষ্টি হয় আলসার এর মত সমস্যা। এছাড়া এই ওষুধ সেবন করলে শরীরে অতিরিক্ত এলার্জি বৃদ্ধি হয়। মাথার চুল পড়ে যাওয়া থেকে শুরু করে পিঠে ও শরীরে বিভিন্ন ঘা ও এলার্জি হয়।
তাছাড়া এই ওষুধ সেবন করলে দ্রুত লিভারের সমস্যা দেখা দেয়। কেউ যদি একাধিক এই সিরাপ সেবন করে সে ব্যক্তির ক্ষেত্রে উল্লেখিত কোন না কোন সমস্যাগুলো অবশ্যই দেখা যায়। তাই ভালো কোন প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি ছাড়া কখনোই আজেবাজে নামের অথবা চোখ ধাঁধানো কোন কোম্পানির আয়ুর্বেদিক ঔষধ সেবন করা থেকে বিরত থাকুন।
আরো পড়ুনঃ তুলসী পাতার রস কোন রোগে বেশি উপকারী জেনে নিন
তবে ঘরোয়া উপায়ে প্রস্তুত বিভিন্ন গাছ থেকে প্রস্তুতকৃত ঔষধ নিজে তৈরি করে নিয়ম অনুযায়ী সেবন করলে এর কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয় না। আশা করি আয়ুর্বেদিক ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়েছেন।
আয়ুর্বেদিক ঔষধ কি ক্ষতিকর?
আয়ুর্বেদিক ঔষধ ক্ষতিকর নয় কিন্তু নিয়মের বাইরে সেবন করলে এর ক্ষতিকর দিক রয়েছে। কেবল মাত্রা অনুযায়ী সেবন করলে এর ক্ষতির দিক লক্ষ্য করা যায় না। তবে আয়ুর্বেদিক ওষুধের মধ্যে বিভিন্ন ওষুধ রয়েছে কোন ওষুধ কবিরাজি দাওয়াখানা থেকে প্রস্তুত করা হয় আবার কোন ওষুধ ল্যাবরেটরিজ প্রস্তুত করা হয়।
এখন যে ওষুধগুলো ল্যাবরেটরি থেকে প্রস্তুত করা হয় এই ঔষধ গুলোর মধ্যে কিছু ভেজাল ওষুধ রয়েছে যা কোন প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির নয়। এই ওষুধগুলো সেবন করলে আপনি বড় ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হবেন। তাই আয়ুর্বেদিক ঔষধ এর ক্ষতিকর দিক এড়াতে অবশ্যই প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির ঔষধ সেবন করুন।
আয়ুর্বেদিক ঔষধ খেলে কি ক্ষতি হয়?
আয়ুর্বেদিক ওষুধ খেলে ক্ষতি হয় না কিন্তু আয়ুর্বেদিক ঔষধ মাত্রাতিরিক্ত সেবন করা উচিত নয়। যেহেতু এই ওষুধগুলো বিভিন্ন প্রাকৃতিক গাছ থেকে প্রস্তুত করা হয় তাই এর ক্ষতিকর দিকগুলো সাথে সাথে দেখা না দিলেও দীর্ঘদিন পরে এর ক্ষতির দিক প্রকাশ পেতে পারে।
মেয়াদোত্তীর্ণ আয়ুর্বেদিক ঔষধ খেলে কি হয়?
মেয়াদ উত্তীর্ণ আয়ুর্বেদিক ঔষধ খেলে দেখা দিতে পারে শরীরের বড় ধরনের সমস্যা। কেননা মেয়াদ উত্তীর্ণ যেকোনো ওষুধ স্বাস্থ্যের জন্য অনুপযোগী। এটি শরীরের বিভিন্ন রোগ সারানোর চাইতে মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ খেলে বিভিন্ন রোগকে আমন্ত্রণ করে। মেয়াদউত্তীর্ণ ওষুধ খেলে লিভার ও কিডনির সমস্যা হতে পারে। তাই মেয়াদ উত্তীর্ণ আয়ুর্বেদিক ঔষধ কখনোই খাওয়া উচিত নয়।
আয়ুর্বেদিক ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কি?
আয়ুর্বেদিক ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। আপনি আয়ুর্বেদিক ঔষধ খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই স্বনামধন্য কোম্পানির আয়ুর্বেদিক ঔষধ খাবেন। যদি ঘরোয়া উপায় প্রস্তুত করতে পারেন তবে আরো ভালো হয়। বিভিন্ন গাছ অথবা গাছের যে কোন অংশ থেকে ওষুধ প্রস্তুত করে আপনি খেতে পারেন এতে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই বাজারের কেনা ওষুধের চাইতে নিজে প্রস্তুতকৃত আয়ুর্বেদিক ঔষধ স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
লেখক এর মন্তব্য
আয়ুর্বেদিক ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং আয়ুর্বেদিক ঔষধ সম্পর্কে একাধিক প্রশ্ন অনেকে জিজ্ঞাসা করেন। আজকের আর্টিকেলটি তাদের উদ্দেশ্যে লেখা আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হবেন। অবশ্যই আয়ুর্বেদিক ঔষধ খেলে এর সেবন মাত্রা অনুযায়ী ওষুধ সেবন করুন আশা করি কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হবেন না।
আয়ুর্বেদিক ঔষধ সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে একজন রেজিস্টার্ড আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করুন। নিয়মিত এরকম গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পেতে আমাদের সাইটে ভিজিট করুন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।