শিশুদের গ্লিসারিন সাপোজিটরি, সবচাইতে ভালো সাপোজিটরি, ব্যবহারের নিয়ম

শিশুদের গ্লিসারিন সাপোজিটরি গ্লিসাপ ১.১৫ গ্রাম ব্যবহার করতে হয়। শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য যে সাপোজিটর গুলো ব্যবহার করলে খুব ভালো কাজ করে শিশুদের গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহারের নিয়ম। এবং শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত সমস্যার বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর থাকছে আজকের আর্টিকেলটিতে।
শিশুদের গ্লিসারিন সাপোজিটরি - শিশুদের গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহারের নিয়ম
কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য গ্লিসারিন সাপোজিটরি অত্যন্ত উপকারী। অনেক শিশুর ক্ষেত্রে দেখা যায় পায়খানা হচ্ছে না। পায়খানার জন্য পেটব্যথা করে শিশু অনেক কান্নাকাটি করে। এমন অবস্থায় গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহার করুন।

পোস্ট সূচিপত্রঃ শিশুদের গ্লিসারিন সাপোজিটরি - শিশুদের গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহারের নিয়ম

.

ভূমিকাঃ

শিশু ও বয়স্কদের কোষ্ঠকাঠিন্যের ক্ষেত্রে গ্লিসারিন সাপোজিটরি অত্যন্ত উপকারী। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে তারা এ সাপোজিটর ব্যবহার করতে পারেন গ্লিসারিন সাপোজিটরি হাইপারওসমোটিক লাক্সাটিভ সমৃদ্ধ যা পায়ুপথের মাধ্যমে কোষ্ঠকাঠিনের চিকিৎসা করা হয়। গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহারে দ্রুত টিস্যু থেকে পানি শুষে নেয় এর ফলে দ্রুত মল নরম হয়। 

শিশু থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্ক প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহার করা যায়। শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে এর মিলিগ্রাম এর পার্থক্য রয়েছে। গ্লিসারিন সাপোজিটরি অনিয়মিত কোষ্ঠকাঠিন্যে চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। এটি ব্যবহারে তেমন কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার লক্ষ করা যায় না তবে সামান্য পরিমাণে মলদ্বারে জ্বালাপোড়া ও ব্যথা অনুভব করতে পারেন। 

এই সাপোজিটরি ব্যবহারের উপযোগী করতে ফ্রিজের নরমাল টেম্পারেচারে রাখতে হয়। শিশুদের গ্লিসারিন সাপোজিটরি কিভাবে ব্যবহার করবেন। শিশুদের জন্য কোন গ্লিসারিন সাপোজিটরি সবচাইতে ভালো। এবং শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্যের ক্ষেত্রে গ্লিসারিন সাপোজিটরি বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের সঠিক পরামর্শ জানতে আর্টিকেলটি পড়ার অনুরোধ রইল।

গ্লিসারিন সাপোজিটরি কাজ কি?

গ্লিসারিন সাপোজিটরির মূল কাজ হলো কোষ্ঠকাঠিন্যে জমা হয়ে থাকা মল কে নরম করে পেট পরিষ্কার করা। গ্লিসারিন সাপোজিটরির মূল উপাদান হলো হাইপারওসমোটিক লাক্সাটিভ যা মলদারের টিস্যু থেকে দ্রুত পানি শোষণ করে অন্ত্রের গতি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। ফলে দ্রুত শক্ত মল নরম হয়ে পেট পরিষ্কার হয়। গ্লিসারিন সাপোজিটরি কোষ্ঠকাঠিন্যের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। গ্লিসারিন সাপোজিটরি মলের সমস্যা সমাধানের সাথে সম্পর্কিত।

শিশুদের গ্লিসারিন সাপোজিটরি

দেখা যায় অনেক শিশুর ২, ৩, দিন পায়খানা হয় না। পেটে পায়খানা জমে থাকার কারণে পেটে ব্যথার সৃষ্টি হয়। ফলে শিশু কান্নাকাটি করতে থাকে খাবার খাই না পেট ফেঁপে যেতে পারে। এমন সমস্যায় শিশুদের গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহার করা যায়। বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির গ্লিসারিন সাপোজিটরি পাওয়া যায়। 

তবে আমাদের দেশে অন্যান্য কোম্পানির চাইতে স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালস এর গ্লিসারিন বাচ্চাদের জন্য সবচাইতে ভালো কাজ করে। এর পাশাপাশি এসিআই লিমিটেডের গ্লিসারিন সাপোজিটরিও ব্যবহার করতে পারেন। শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্যে ব্যবহারিত গ্লিসারিন সাপোজিটরির নাম নিচে দেওয়া হলঃ
  • GLYSUP 1.15 gm স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যাল দাম ৩.০১ টাকা
  • SAPOTOR 1.15 gm এ সি আই লিমিটেড দাম ৩ টাকা
শিশুদের জন্য এই দুইটি গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহার করা হয়। আপনি এই দুইটির মধ্যে যেকোনো একটি ব্যবহার করতে পারেন। আশা করি শিশুদের গ্লিসারিন সাপোজিটরি সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়েছেন।

শিশুদের গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহারের নিয়ম

শিশুদের ক্ষেত্রে গ্লিসারিন সাপোজিটরি অবশ্যই নিয়ম মেনে ব্যবহার করা উচিত। শিশুদের ক্ষেত্রে সতর্ক হয়ে এ সাপোজিটরি ব্যবহার করুন। আপনার শিশুর বয়স ১-৬ বছরের মধ্যে হলে দিনে সর্বোচ্চ একবার একটি গ্লিসারিন সাপোজিটরি ১.১৫ পায়ুপথে ব্যবহার করুন। আপনার শিশুর বয়স যদি ৬ বছরের বেশি হয় সেক্ষেত্রে গ্লিসারিন সাপোজিটরি ২.৩০ দিনে একবার পায়ুপথে ব্যবহার করুন। 
শিশুদের গ্লিসারিন সাপোজিটরি - শিশুদের গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহারের নিয়ম
তবে সমস্যা অনুযায়ী এর মাত্রা কমবেশি করা যেতে পারে। সবচাইতে ভালো উপায় হলো আপনার শিশুর সমস্যা সম্পর্কে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে ব্যবহার করুন এতে ভালো ফলাফল পাবেন। শিশুদের গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহারের নিয়ম মেনে সাপোজিটরি ব্যবহার করুন তাহলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মত সমস্যা হাওয়া থেকে দূরে থাকবেন।

বাচ্চাদের গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহার করা যাবে কি?

বাচ্চাদের ক্ষেত্রে গ্লিসারিন সাপোজিটরি অবশ্যই ব্যবহার করা যাবে। যদি আপনার শিশু কোষ্ঠকাঠিন্যর জন্য পায়খানা হতে সমস্যা হয়, পেটে পায়খানা জমে থাকার ফলে পেট ব্যথা হয়, পেট ফেঁপে যায় সে ক্ষেত্রে গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহার করুন। তবে মাত্রাতিরিক্ত কখনোই ব্যবহার করবেন না আপনার শিশুর বয়স যদি এক বছরের কম হয় সে ক্ষেত্রে গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহার না করাই ভালো। 
যদি অতিরিক্ত সমস্যা হয় সে ক্ষেত্রে রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। আপনার শিশুর বয়স এক বছরের বেশি হলে গ্লিসারিন সাপোজিটরি ১.১৫ দিনে একবার ব্যবহার করুন। তবে এটি নিয়মিত ব্যবহার করবেন না। এটি অনিয়মিত কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করার জন্য ব্যবহার করা হয়।

বাচ্চাদের গ্লিসারিন সাপোজিটরি কিভাবে দিতে হয়?

বাচ্চাদের গ্লিসারিন সাপোজিটরি দেওয়ার সময় অবশ্যই সতর্ক হওয়া উচিত। বাচ্চাকে গ্লিসারেন সাপোজিটরি দেওয়ার আগে অবশ্যই সাপোজিটরি ফ্রিজের নরমাল পজিশনে ১৫ মিনিট রেখে দিন। ১৫ মিনিট পর সাপোজিটরি হালকা শক্ত হলে মোড়োক খুলে সাপোজিটরি বের করুন। এরপর আপনার হাতের দুই আঙ্গুল দিয়ে সাপোজিটরি শক্ত করে ধরুন। 

শিশুকে শুইয়ে দিন এরপর আপনার অন্য হাত দিয়ে শিশুর পায়ুপথে গ্লিসারিন সাপোজিটরি প্রবেশ করান। এবং একটি আঙ্গুল দিয়ে সাপোজিটরি কে চাপদিন। এইভাবে বাচ্চাদের গ্লিসারিন সাপোজিটরি দিতে হয়।

গ্লিসারিন সাপোজিটরি দেওয়ার পর পায়খানা না করলে কি হয়?

গ্লিসারিন সাপোজিটরি দেওয়ার ১৫ মিনিট থেকে এক ঘণ্টার মধ্যে শিশুর পায়খানা হবেই। পায়খানা হয় না এমন সংখ্যা খুবই কম। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে গ্লিসারিন সাপোজিটরি অনেক ভালো কাজ করে। গ্লিসারিন সাপোজিটরি দেওয়ার পর যদি বাচ্চার পায়খানা না হয় সেক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। 

কেননা যদি পায়খানা না হয় সেক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্যের বিপরীতে অন্য কোন সমস্যা হতে পারে। শিশুদের নাড়িতে প্যাচ লেগে গেলে শিশুদের পেট ফোলা সহ পায়খানা বন্ধ হয়ে যায়। তাই গ্লিসারিন সাপোজিটরি দেওয়ার পর যদি পায়খানা না হয় সে ক্ষেত্রে অবশ্যই রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

গ্লিসারিন সাপোজিটরি কতক্ষণ রাখতে হয়?

গ্লিসারিন সাপোজিটরি রাখার ক্ষেত্রে তেমন কোন নির্দিষ্ট সময়ের কথা বলা নেই। এই সাপোজিটরি পায়ুপথে প্রবেশ করানোর পর এমনিতেই এটি গলে যাই। ১৫-৬০ মিনিটের মধ্যে পায়খানা হয়ে যায়। এই সাপোজিটরিটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে রাখা বা না রাখার সাথে কোন সম্পর্কিত নয়। এটি পায়ুপথে প্রবেশ করালে এমনিতে গলে যায়। তবে সাপোজিটরি পায়ুপথে প্রবেশ করানোর পর অবশ্যই না বের করে ১৫- ৬০ মিনিট রাখতে হবে। কারণ এটি তার কার্যক্ষমতা শুরু করতে ১৫-৬০ মিনিট সময় নেয়।

গ্লিসারিন সাপোজিটরি কেন ব্যবহার করা হয়?

যাদের অতিরিক্ত কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে পায়খানা হয় না, পায়খানা হলেও পায়খানা করতে কষ্ট হয় তাদের ক্ষেত্রে গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহার করা হয়। পায়খানা না হলে পেট ফেঁপে যায়, পেটে ব্যথা হয় এমন সময় গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহার করা হয়। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে কয়েকদিন পায়খানা না হলে, পায়খানা হচ্ছে না এমন অবস্থায় কান্নাকাটি করলে, পায়খানা হচ্ছে না এমন অবস্থায় খাওয়া দাওয়া না করলে গ্লিসারিন সাপোজিটারি ব্যবহার করা হয়।

গ্লিসারিন সাপোজিটরি কিভাবে ব্যবহার করতে হয়?

গ্লিসারিন সাপোজিটরি শিশু থেকে প্রাপ্তবয়স্কদের সর্বোচ্চ দিনে একবার পায়ুপথে ব্যবহার করতে হয়। শিশুদের ক্ষেত্রে ১.১৫ মিলিগ্রাম ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে ২.৩০ পায়ুপথে ব্যবহার করা হয়। এটি ব্যবহারের পূর্বে ফ্রিজের নরমাল টেম্পারেচারে ১৫ থেকে ২০ মিনিট রাখতে হয় এরপর মোড়ক খুলে সাপোজিটরি পায়ুপথে প্রবেশ করানো হয়।

লেখক এর মন্তব্য

অনেক সন্তানের বাবা-মা শিশুদের গ্লিসারিন সাপোজিটরি ও গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন। আজকের আর্টিকেলটি তাদের উদ্দেশ্যে লেখা। আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হবেন। গ্লিসারিন সাপোজিটরি সম্পর্কে আপনার যদি অন্য কোন প্রশ্ন থাকে সেক্ষেত্রে কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। 

শিশুর আরো অন্যান্য সমস্যা ও প্রতিকার সম্পর্কে জানতে আমাদের ওয়েবসাইটের সার্চ বারে শিশু লিখে সার্চ করুন। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন। নিয়মিত এরকম গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পেতে আমাদের সাইটটি ভিজিট করুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন