পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা কারণ - পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা কমানোর ঔষধ

পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা কারণ একাধিক। বিভিন্ন সমস্যার কারণে পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা হয়। তবে পায়ের মাংসপেশিতে ক্যালসিয়াম জনিত সমস্যার কারণে বেশি ব্যথা হয়। পায়ের মাংসপেশিতে কামড়ানোর কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত থাকছে আজকের আর্টিকেলটিতে।

অধিকাংশ ব্যক্তিদেরই পায়ের মাংসপেশীতে ব্যথা করে ও কামড়ায়। পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা জ্বালাপোড়া ও কামড়ানোর একাধিক কারণ রয়েছে। সামান্য কিছু নিয়ম মেনে চললে পায়ের মাংসপেশীর ব্যথা, জ্বালাপোড়া, কামড়ানো, দূর করতে পারবেন। পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা কারণ লক্ষণ, ঔষধ, চিকিৎসা, প্রতিকার, সম্পর্কে জানতে হলে পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

পায়ের মাংসপেশির ব্যথা অসহনীয় রাতে ঘুমানোর সময় পায়ের মাংসপেশির ব্যথা হলে ঘুম আসে না। এ ব্যথা অসহনীয় একটি অনুভূতি। অল্প সমস্যা হলেই যদি এ রকম সমস্যার প্রতিকার না করেন তাহলে এই ব্যথা গুরুতর আকার ধারণ করে। অনেক ব্যক্তির পায়ের পেশির ব্যথা হয়, পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা হয়, 

শরীরের বিভিন্ন পেশিতে ব্যথা হয়, এবং পায়ের পেশি কামড়ায়, আপনার পায়ের যদি এই রকম সমস্যাগুলো থাকে তাহলে যে উপায় গুলো অনুসরণ করে দ্রুত সুস্থ হবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

আপনার পায়ের মাংসপেশীতে দীর্ঘদিন যাবত ব্যথা হলে খুব সহজে কিছু উপায় অবলম্বন করলে পায়ের মাংসপেশির ব্যথা কমাতে পারবেন। আপনি যদি অতিরিক্ত ভারী কাজ করেন সে ক্ষেত্রে কাজের পরিমাণ কমিয়ে দিন। নিয়মিত আপনি বেশি পরিমাণ হাঁটলে, হাঁটার পরিমাণ কমিয়ে দিন। আপনার হাঁটার সময় পায়ের সাইজের সঠিক জুতা পরিধান করুন। নিয়মিত ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার খান। যখন আপনার পায়ের পেশিতে ব্যথা করবে এমন সময় হরলিক্স অথবা মুরগির দুটি ডিম সেদ্ধ করে খেয়ে নিন দ্রুত পায়ের পেশির ব্যথা উপশম হবে।

অনেকেই পায়ের মাংসপেশীতে কেন ব্যথা হয় সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন। একাধিক কারণে পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা হয়। এই ব্যথা হওয়ার কারণগুলো এড়িয়ে চললে এবং পেশির ব্যাথা দূর করা উপায় অবলম্বন করলে খুব সহজে পায়ের মাংসপেশীর ব্যথা দূর হবে। পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা কারণ সমূহ হলোঃ

অতিরিক্ত পায়ের পরিশ্রমঃ পায়ের মাংসপেশীতে ব্যথা কারণ অতিরিক্ত পায়ের পরিশ্রম। আপনি প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে হাঁটলে পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা করবে। প্রচুর ভারী বহন করা কাজ করলে পায়ের মাংস বেশি ব্যথা করে। তাই অধিক হাঁটাহাঁটি ও ভারী বহন করা বর্জন করুন।

পেশিতে টান ও আঘাত লাগাঃ হঠাৎ হাটতে গিয়ে পা মচকে গেলে অথবা খেলতে গিয়ে আঘাত পেলে, তাছাড়া ভিটামিনের অভাব হলে পায়ের পেশিতে টান ধরে।

শরীরে ভিটামিনের ভারসাম্যহীনতাঃ পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা কারণ গুলোর মধ্যে একটি হলো শরীরে ভিটামিনের ভারসাম্যহীনতা। শরীরে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনের ঘাটতি হলে পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা হয়।

রক্ত সঞ্চালনের ব্যাঘাতঃ পায়ের শিরা ও মাংসপেশীতে সঠিকভাবে রক্ত চলাচল না করলে পায়ের মাংসপেশি ব্যথা হয়। তাই সঠিক রক্ত সঞ্চালনের জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করুন।

স্নায়ুর সমস্যাঃ কোন বিশেষ কারণে অথবা ভুলবশত আপনার পায়ের স্নায়ু আঘাতগ্রস্ত হলে স্নায়ু সমস্যা দেখা দেয়। সমস্যা হলে পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা হয়।

আর্থাইটিস জয়েন্টের সমস্যাঃ আপনার পায়ের কোন গিটাই বা জয়েন্টে যদি ব্যথা করে সেক্ষেত্রে সে ব্যথা পায়ের মাংসপেশীতে প্রভাব ফেলতে পারে। গিটার ব্যথা বেশি হলে কাছাকাছি এই ব্যথা মাংসপেশীতে প্রভাব ফেলে।

ক্যালসিয়ামের ঘাটতিঃ শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হলে পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা হয়। নিয়মিত ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার খেলে খুব সহজে এই ব্যথা ভালো হয়ে যায়।

ভারী উত্তোলনঃ যারা নিয়মিত কঠোর পরিশ্রম করেন, ভারী উত্তোলনের মত কাজ করেন তাদের পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা হয়।

শরীরে পানির ঘাটতিঃ শরীরের প্রয়োজনের তুলনায় কম পানি পান করলে শরীরে পানির ঘাটতি দেখা দেয় এমন অবস্থায় পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা হয়।

অধিক হাঁটাঃ প্রয়োজনের তুলনায় নিয়মিত অতিরিক্ত হাঁটলে পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা হয়। এমন অবস্থায় নিয়ম মেনে হাঁটাহাঁটি করলে মাংসপেশির ব্যথা উপশম হয়।

সঠিক জুতাঃ পায়ের সাইজের তুলনায় ছোট জুতা পরিধান করলে পায়ের মাংসপেশীতে ব্যথা হয় পা ফুলে যায়। তাই জুতা পরিধান করার সময় অবশ্যই পায়ের জন্য সহনীয় কিনা সে বিষয়ে সচেতন হওয়া উচিত।

শরীরের অধিক ওজনঃ শরীরের ওজন বেশি হলে পায়ের উপরে অতিরিক্ত চাপ পড়ে সে ক্ষেত্রে পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা হয়।

নিয়মিত এই উপায়গুলো মেনে চললে এবং অতিরিক্ত সবকিছু এড়িয়ে চললে পায়ের পেশীর ব্যথা খুব সহজেই সেরে যায়। কিন্তু ব্যথা যদি কিছুতেই না সারে সেক্ষেত্রে ওষুধ সেবন করা উচিত। প্রিয় পাঠক আশা করি পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা কারণ সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়েছেন।

বিভিন্ন সমস্যার কারণে পায়ের মাংসপেশিতে কামড়ায়। অতিরিক্ত চলাফেরা করলে পায়ের মাংসপেশীতে ল্যাকটিক অ্যাসিড জমা হয়, দীর্ঘক্ষণ হাঁটার ফলে ল্যাকটিক অ্যাসিড পায়ের মাংসপেশিতে কামড়ায়। প্রত্যেকের শরীরে ইলেক্ট্রোলাইটের পরিমাণ কম বেশি হয়। শরীরে ইলেকট্রোলাইট কমে গেলে অথবা বৃদ্ধি পেলে পায়ের মাংসপেশিতে কামড়াতে পারে। এছাড়া ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দেখা দিলে পায়ের মাংসপেশিতে কামড়ায়। শরীরে অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি পেলে শরীরের ওজন পায়ের উপর পড়ে সে ক্ষেত্রে পায়ের মাংসপেশিতে কামড়ায়।

পায়ের মাংসপেশির ব্যথা কমানোর বিভিন্ন ঔষধ সেবন করা যেতে পারে। পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা কারণ সম্পর্কে সঠিকভাবে ধারণা থাকলে দ্রুত এই ব্যথা উপশম করার সম্ভব। ঘরোয়া পদ্ধতিতে পায়ের মাংসপেশির ব্যাথা না উপশম হলে সে ক্ষেত্রে পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা কমানোর ঔষধ গুলো খেতে পারেনঃ

উপরে উল্লেখিত প্রত্যেকটি ওষুধ পায়ের মাংসপেশীতে ব্যথা কমানোর জন্য ব্যবহারিত হয়। আপনি এই ওষুধগুলোর মধ্যে থেকে যেকোনো ওষুধ সেবন করতে পারেন। আপনার পায়ের মাংসপেশীতে ব্যথা হলে উপরের ওষুধগুলো সেবন করে দ্রুত সুস্থ হতে পারবেন। তবে পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা কমানোর ঔষধ সেবনের পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কেননা একজন চিকিৎসক আপনার পায়ের পরিস্থিতি দেখে, জেনে বুঝে, আপনার বয়স অনুপাতে ঔষধ খাবার পরামর্শ দেবেন।

পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা হলে ব্যায়াম তেমন কোন কাজে দেয় না। এমন অবস্থায় ব্যায়াম করলে পায়ের মাংসপেশির ব্যথা বৃদ্ধি পায়। যাদের পায়ের মাংসপেশীর রক্ত সঞ্চালন ক্ষমতা কমে যায় এমন অবস্থায় ব্যথা হয় সে ক্ষেত্রে ব্যায়াম করা যায়। পায়ের মাংসপেশির ব্যথার ব্যায়াম হলো নিয়মিত পায়ের মাংসপেশি ম্যাসাজ করুন। 

প্রতিদিন সকালে পায়ের পাতার উপরে ভর করে দাঁড়ানোর চেষ্টা করুন। পায়ের আঙ্গুলগুলো বেঁকিয়ে ব্যায়াম করুন। নিয়মিত পায়ের গোড়ালির ব্যায়াম করুন এই উপায় গুলো অবলম্বন করলে পায়ের রক্ত সঞ্চালন ক্ষমতার বৃদ্ধি পাবে এতে পায়ের মাংসপেশির ব্যথা কমবে।

পায়ের মাংসপেশিতে কামড়ানো ঔষধ অনেকেই খোঁজাখুঁজি করেন। পায়ের মাংসপেশীতে ব্যথার জন্য, কামড়ানো, যন্ত্রণা, চাবানি, জন্য আপনি পায়ের মাংসপেশিতে কামড়ানো ঔষধ সেবন করলে দ্রুত সুস্থ হবেন। পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা এবং কামড়ানোর ক্ষেত্রে একই ওষুধ সেবন করা যেতে পারে। পায়ের মাংসপেশিতে কামড়ানোর জন্য আপনি নাপা এক্সট্রা সেবন করতে পারেন যদি কিছুক্ষণের মধ্যে ব্যাথা না কমে সে ক্ষেত্রে Diclomol table সেবন করুন দ্রুত পায়ের মাংসপেশিতে কামড়ানো উপশম হবে।

এরপরেও যদি সুস্থ না হন সে ক্ষেত্রে উপরে দেওয়া পায়ের মাংসপেশিতে কামড়ানো ঔষধ গুলো সেবন করুন। প্রত্যেকটি ওষুধ হয় পায়ের মাংসপেশিতে কামরানোর ঔষধ, পাশাপাশি ব্যথা, চাবানি দূর করতে সাহায্য করে।

পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথার জন্য এলোপ্যাথিক ঔষধের পাশাপাশি হোমিও ওষুধ এর মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়। তবে এলোপ্যাথিক ওষুধের তুলনায় হোমিও ঔষধ কাজ করতে দীর্ঘ সময় নেয় ফলে অনেকে হোমিও ঔষধ সেবন করতে নারাজ। পায়ের মাংসপেশীতে ব্যথার চিকিৎসায় যে হোমিও ঔষধ গুলো ব্যবহারিত হয় তা হলঃ বেলিস পেরেনিস ৩০, রুটা গ্রাভ ৩০, সায়াটিকা, পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা হলে উপরোক্ত পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা কমানোর ঔষধ গুলো সেবন করলে দ্রুত পায়ের মাংসপেশির ব্যথা উপশম হয়।

পায়ের মাংসপেশিতে বিভিন্ন সমস্যার কারণে জ্বালাপোড়া করে। তবে বিশেষ করে পায়ের রক্ত সঞ্চালন ক্ষমতা কমে গেলে পায়ের মাংসপেশিতে জ্বালাপোড়া হয়। পায়ের স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হলে পায়ের মাংসপেশিতে জ্বালাপোড়া করে। অজান্তে কোন পোকা মাকড়ে কামড়ে দিলে পায়ের মাংসপেশিতে জ্বালাপোড়া করে। 

পায়ের রক্তনালিতে প্লেক জমা হলে পায়ের মাংসপেশিতে জ্বালাপোড়া করে। তাই পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা কারণ ও পায়ের জ্বালাপোড়া দূর করার কিছু নিয়ম মেনে চললে সহজেই পায়ের মাংসপেশির ব্যথা ও জ্বালাপোড়া দূর করা যায়। হঠাৎ যদি আপনার পায়ের মাংসপেশীতে ব্যথা ও জ্বালাপোড়া করে তাহলে আপনি পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা কমানোর ঔষধ সেবন করুন। দুই এক দিন সেবন করে যদি সুস্থ না হন তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন। 

পায়ের মাংসপেশিতে টান ধরা তেমন কোন গুরুতর সমস্যা নয়। কমবেশি প্রত্যেকেরই পায়ের মাংসপেশিতে টান ধরে হঠাৎ করে পায়ের রগ এবং মাংসপেশীতে টান ধরে। পায়ের মাংসপেশিতে টান ধরলে আপনার করণীয় হলো আপনার যে অংশে টান ধরেছে সে অংশে হাত দিয়ে ম্যাসাজ করুন। আপনার যে দিকে টান ধরেছে সে দিকের বিপরীত দিকে আপনার পা কে সোজা করুন অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই মাংসপেশী টান ভালো হবে। নিয়মিত এ রকম সমস্যা হলে বেশি বেশি ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার খান দ্রুত সুস্থ হবেন।

পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা কারণ, পায়ের মাংসপেশিতে ব্যথা কমানোর ঔষধ, মাংসপেশিতে জ্বালাপোড়া, পায়ের তালুতে জ্বালাপোড়া পায়ের মাংসপেশিতে টান হওয়া, এছাড়া পায়ের মাংসপেশী বিষয়ে যারা বিভিন্ন প্রশ্ন করেন আজকের আর্টিকেলটি তাদের উদ্দেশ্যে লেখা। আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হবেন। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন এ রকম গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পেতে নিয়মিত আমাদের সাইটটি ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।