১৫টি মুখে দাড়ি গজানোর প্রাকৃতিক উপায়
একগুচ্ছ দাড়ির পরিবর্তে মুখ ভর্তি দাড়ি প্রত্যেকেরই স্বপ্ন বলা চলে। তবে কয়জনের হয় এ রকম মুখ ভর্তি দাড়ি স্বপ্ন সবার স্বপ্নই থেকে যায়। আপনার দাড়ির সংখ্যা কম হলে মুখে দাড়ি গজানোর প্রাকৃতিক উপায় গুলো অবলম্বন করুন। মুখে চাপ দাড়ি গজানোর উপায় সম্পর্কে ধারণা থাকলে মুখের পাতলা দাঁড়ি ঘন করা যায়।
ঘন দাড়ি বা চাপ দাড়ি চেহারার সৌন্দর্যকে বৃদ্ধি করে। অনেকের মুখে দাড়ির সংখ্যা খুবই কম। তারা নিয়মিত বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করেও নতুন দাড়ি গজানোর ক্ষেত্রে ভালো ফলাফল পাচ্ছেন না।
পোস্ট সূচিপত্রঃ মুখে দাড়ি গজানোর প্রাকৃতিক উপায় - মুখে চাপ দাড়ি গজানোর উপায়
.
ভূমিকাঃ
দাড়ি আল্লাহর একটি নিয়ামত বলা চলে। দাড়ি কারোর মুখে বেশি কারোর মুখে কম এমনটা প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই লক্ষ্য করা যায়। তবে কিছু নিয়ম অনুসরণ করলে মুখের দাড়ির ঘনত্ব বৃদ্ধি করা সম্ভব। চাপ দাড়ি কে না চায়, প্রত্যেকেই এই স্বপ্ন পূরণের জন্য উঠেপড়ে লেগে আছেন। ঔষধ, ক্রিম, তেল, বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করছেন।
কিন্তু সঠিক ফলাফল পাচ্ছেন না। অধিক খরচের সম্মুখীন হচ্ছেন এরপর আজেবাজে প্রোডাক্ট মুখে ব্যবহারের ফলে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার স্বীকার হচ্ছেন৷ তাই যেন-তেন উপায় অবলম্বন না করে মুখে দাড়ি গজানোর প্রাকৃতিক উপায় অবলম্বন করুন। আশা করি দাড়ি গজানোর ক্ষেত্রে খুব ভালো ফলাফল পাবেন।
নতুন দাড়ি গজানোর উপায়
যাদের মুখে দাড়ির সংখ্যা অত্যন্ত কম তারা নতুন দাড়ি গজানোর উপায় অবলম্বন করতে পারেন। নতুন দাড়ি গজানোর ক্ষেত্রে অবশ্যই সব সময় আপনার মুখমন্ডল পরিষ্কার রাখবেন। দিনে তিন থেকে চারবার সাধারণ ফ্রেশওয়াশ দিয়ে মুখমণ্ডল পরিষ্কার করুন। এতে নতুন দাড়ি গজাতে সাহায্য করবে। অতিরিক্ত সেভ করা থেকে দূরে থাকুন।
সেভ করার পরিবর্তে ট্রিমার দিয়ে দাড়ি ছেটে নিন। দাড়ির বৃদ্ধির জন্য টেস্টোস্টেরন হরমোন যুক্ত খাবার বেশি বেশি গ্রহণ করুন। এতে নতুন দাড়ি গজাতে সাহায্য করবে। নিয়মিত মুখের ত্বকে অলিভ অয়েল তেল ব্যবহার করুন এতে রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বকের রক্ত সঞ্চালন ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে নতুন দাড়ি গজাতে সাহায্য করবে। এই উপায় গুলো অনুসরণ করলে খুব দ্রুত মুখে নতুন দাড়ি গজাবে।
মুখে দাড়ি গজানোর প্রাকৃতিক উপায়
অনেকের মুখে দাড়ির সংখ্যা খুবই কম এতে চিন্তিত হন। দাড়ি সৌন্দর্যের প্রতীক দাড়ি সৌন্দর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি আত্মসম্মানবোধ বৃদ্ধি করে। মুখে দাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি করতে যে উপায় গুলো অবলম্বন করেন এই উপায়গুলোর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ত্বকের বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে। এছাড়া অনেক অর্থ ব্যয় করেও সঠিক ফলাফল পাওয়া যায় না। তাই আপনি মুখে দাড়ি গজানোর প্রাকৃতিক উপায়গুলো অবলম্বন করুন যেমনঃ
খাবারঃ দাড়ি ওঠার পেছনে মূল ভূমিকা রাখে টেস্টোস্টেরন হরমোন। তাই নিয়মিত খাবারের পাশাপাশি এই হরমোনযুক্ত খাবার বেশি বেশি গ্রহণ করলে মুখে দাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।
পেঁয়াজের রসঃ পেঁয়াজের রসে প্রচুর পরিমাণে সালফার রয়েছে যা নতুন দাড়ি গজাতে সাহায্য করে তাই নিয়মিত মুখে পেয়াজের রস ও নারিকেল তেল একত্রে ব্যবহার করুন।
অলিভ অয়েলঃ দাড়ি গজানোর ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক ভাবে এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েলের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। অলিভ অয়েল ত্বকে ব্যবহারের ফলে ত্বকের রক্ত সঞ্চালন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে নতুন দাড়ি গজাতে সাহায্য করে।
আমলকির তেলঃ আমলকির তেল নতুন দাড়ি গজানোর ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখে। নিয়মিত রাতে ঘুমানোর পূর্বে মুখে আমলকির তেল ব্যবহার করুন এরপর পরিষ্কার পানি দিয়ে দশ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে মুখে দাড়ির ঘনত্ব বৃদ্ধি পাবে।
সবজি জাতীয় খাবারঃ শরীরের ত্বকের চুল বৃদ্ধির জন্য সবজি জাতীয় খাবার বিশেষ ভূমিকা রাখে। নিয়মিত পালং শাক লাল শাক, মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাবারের সাথে গ্রহণ করুন। এতে দাঁড়ি ঘনত্ব বৃদ্ধি পাবে।
নারিকেল তেলঃ চুলের যত্নে নারিকেল তেল অনেক উপকারী। নিয়মিত মুখের ত্বকে আলতোভাবে নারিকেল তেল ব্যবহার করুন এতে দাড়ি গজাতে সাহায্য করবে।
ইউক্যালিপটাস তেলঃ ইউক্যালিপটাস তেল ত্বকের ময়শ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে। তাই দাড়ি বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত মুখের ত্বকে ইউক্যালিপটাস তেল ব্যবহার করুন।
পুষ্টিকর খাবারঃ নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন, বিশেষ করে চুলের বৃদ্ধি হয় ও চুলের জন্য উপকারী এ রকম পুষ্টিকর খাবার বেশি বেশি গ্রহণ করুন। এতে নতুন দাড়ি গজাতে ও দাড়ির স্থায়িত্ব বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।
উল্লেখিত এই উপায়গুলো অবলম্বন করলে খুব সহজেই মুখে দাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পারবেন। দাড়ি হবে সৌন্দর্য ভরপুর। আশাকরি মুখে দাড়ি গজানোর প্রাকৃতিক উপায় সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়েছেন।
মুখে চাপ দাড়ি গজানোর উপায়
অনেকে চাপ দাড়ির আশায় মুখে অনেক কিছু ব্যবহার করছেন কিন্তু সঠিক ফলাফল পাচ্ছেন না। মুখে চাপ দাড়ি গজানোর জন্য আপনি বিশেষ কিছু উপায় অবলম্বন করতে পারেন যেমনঃ ঘন ঘন সেভ করা এড়িয়ে চলুন, কমপক্ষে এক মাস পর পর ট্রিমার দিয়ে সেভ করুন। শরীরের রক্ত সঞ্চালন ক্ষমতা বৃদ্ধি হয় এরকম ভিটামিনযুক্ত খাবার গ্রহণ করুন।
নিয়মিত টেস্টোস্টেরন হরমোনযুক্ত খাবার গ্রহণ করুন। প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করুন। নিয়মিত মুখের ত্বককে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন এতে চাপ দাড়ি গজাতে সাহায্য করবে। বিভিন্ন ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করার পরেও যদি সঠিক ফলাফল না পান, সেক্ষেত্রে তেল, ঔষধ, ক্রিম, ব্যবহার করতে পারেন এছাড়া ভালো ফলাফলের জন্য চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন।
মুখে দাড়ি গজানোর ক্রিম
অনেকেই মুখে দাড়ি গজানোর ক্রিম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন। আসলে দাড়ি গজানোর তেমন কোন ক্রিম ফার্মেসিতে বা অন্য কোথাও এখন পর্যন্ত পাওয়া যায় না। যদিও কোন ডক্টর বা কোন চিকিৎসক দাড়ি গজানোর কথা বলে ক্রিম দিয়ে থাকে তাহলে সেটি অহেতুক। দাড়ি গজানোর ক্ষেত্রে ঔষধ অথবা দাড়িতে তেল ব্যবহার করতে পারেন সে ক্ষেত্রে দাড়ির ঘনত্ব বৃদ্ধি পাবে।
মুখে দাড়ি গজানোর ঔষধ
মুখে দাড়ি গজানোর জন্য সবচাইতে ভালো ওষুধ হিসেবে যে ওষুধ কাজ করে তাহল ভিটামিন ই ক্যাপসুল। এই ক্যাপসুলে চুলের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন রয়েছে। এছাড়া শরীরের টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধির জন্য যেকোনো ওষুধ অথবা খাবার খেতে পারেন। এতে দাড়ি গজাতে সাহায্য করবে।
এছাড়া দাড়ি গজানোর জন্য যে ওষুধ সবচাইতে কার্যকরী তাহল: Minoxidil, Finasteride 1mg এ দুইটি ওষুধের মধ্যে যে কোন ঔষধ আপনি সেবন করতে পারেন। তবে সেবনের পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
দাড়ি গজানোর হোমিওপ্যাথিক ঔষধ
আপনি হোমিও ওষুধ সেবনের পূর্বে মুখে দাড়ি গজানোর প্রাকৃতিক উপায় অবলম্বন করুন। সন্তুষ্ট জনক ফলাফল না পেলে সে ক্ষেত্রে হোমিও ঔষধ সেবন করতে পারেন। দাড়ি গজানোর জন্য হোমিওপ্যাথিক ঔষধ অনেক ভালো কাজ করে। হোমিওপ্যাথিক ঔষধ সেবনের ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করতে হয়।
হোমিওপ্যাথিক ঔষধ সেবনের পূর্বে অবশ্যই একজন রেজিস্টার চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। সাধারণত দাড়ির ঘনত্ব বৃদ্ধির জন্য ও নতুন দাড়ি গজানোর জন্য যে ঔষধ গুলো ব্যবহার করা হয় তাহলঃ Testis 3x power, Natrum Mur 12x হোমিওপ্যাথিক এ দুইটি ওষুধ দাড়ি গজানোর চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়।
মুখে দাড়ি গজানোর তেল
মুখে দাড়ি গজানোর ক্ষেত্রে তেল অত্যন্ত উপকারী। অনেকে দাড়ি গজানোর ক্ষেত্রে ও দাড়ির ঘনত্ব বৃদ্ধির জন্য তেল ব্যবহার করেন। বাজারে দাড়ি গজানোর বিভিন্ন কোম্পানির তেল পাওয়া যায় তবে এর মধ্যে সবচাইতে ভালো কিছু তেলের তালিকা দেওয়া হলঃ
- Beard growth Oil
- Men's Beard growth Oil
- BY MY Beard oil
- Balay Beard growth oil
উপরের এই তেলগুলো মুখের দাড়ি গজানোর জন্য সবচাইতে ভালো কাজ করে। তাবে অতিরিক্ত ব্যবহারে এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। তাই নির্দেশিকা অনুযায়ী ত্বকে ব্যবহার করুন।
দাড়ি গজানোর তেল ব্যবহারের নিয়ম
দাড়ি গজানোর তেল ব্যবহারে সঠিক নিয়ম হলো রাতে ঘুমানোর পূর্বে মুখমণ্ডল ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন এরপর হাতে ২-৩ ফোটা পরিমাণ তেল নিন আলতোভাবে দুই গালে মাখিয়ে দিন। এরপর সকালে ঘুম থেকে উঠে মুখ ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। পুনরায় রাতের নিয়ম অনুযায়ী ২ ফোটা তেল একইভাবে আবার ব্যবহার করুন। এভাবেই সর্বোচ্চ এক সপ্তাহ ব্যবহার করলে নিজে থেকেই এর ফলাফল বুঝতে পারবেন।
মুখে দাড়ি গজানোর দোয়া
যারা মুখে দাড়ি ওঠা নিয়ে চিন্তিত রয়েছেন অথবা মুখে কম সংখ্যক দাঁড়িয়ে রয়েছে তারা দাড়ির ঘনত্ব বৃদ্ধির জন্য এবং মুখে দাড়ি গজানোর জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতে পারেন। তবে অবশ্যই মনে বিশ্বাস রেখে আমলটি করতে হবে। আমলটি হলঃ "ওল্লহু আলিমুম বিজা তিছ ছুদূর" আমলটি ২৯ দিন দিনে ১২ বার করে পাঠ করতে হবে।
নিয়মিত ২৯ দিন দিনে ১২ বার পাঠ করে এক গ্লাস পানিতে ফু দিতে হবে। এরপর এই পানি দিয়ে মুখমণ্ডল ধুয়ে নিবেন। তবে ব্যবহৃত পানিটি অবশ্যই নোংরা জায়গায় ফেলবেন না। কোন গাছের নিচে অথবা পুকুরের পানিতে ফেলতে পারেন। আশা করি আল্লাহর উপর বিশ্বাস রেখে এই আমলটি করলে ভালো ফলাফল পাবেন।
লেখক এর মন্তব্য
মুখে দাড়ি গজানোর প্রাকৃতিক উপায়, ও মুখে চাপ দাড়ি গজানোর উপায় সম্পর্কে অনেকে জিজ্ঞাসা করেন আজকের আর্টিকেলটি তাদের উদ্দেশ্যে লেখা। আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হবেন। এছাড়া দাড়ি গজানো সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেয়ার চেষ্টা করেছি। এর বাইরে যদি আপনার কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন।
আর্টিকেলটি যদি ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করুন। নিয়মিত এ রকম আর্টিকেল পেতে আমাদের সাইটটি ভিজিট করুন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।