ভিটামিন এ এর অভাবজনিত রোগের প্রতিকার - ভিটামিন এ এর অভাবজনিত লক্ষণ
ভিটামিন এ এর অভাবজনিত রোগের প্রতিকার সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান। আজকের আর্টিকেলটি তাদের জন্য। আর্টিকেলটিতে আরো আলোচনা করা হয়েছে ভিটামিন এ এর অভাবজনিত লক্ষণ সম্পর্কে।
মানবদেহে ভিটামিন এ এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আমাদের শরীরে এই ভিটামিনের ঘাটতি দেখা দিলে বিভিন্ন রোগ ব্যাধির সম্মুখীন হতে হয়। ভিটামিন এ এর অভাবে কি কি রোগ হয়, এবং ভিটামিন এ এর অভাবজনিত রোগের প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে আমাদের পুরো আর্টিকেলটি পড়ুন।
সূচিপত্রঃ .ভূমিকাঃ
আমাদের শরীরের জন্য ভিটামিন এ এর প্রচুর ভূমিকা রয়েছে। ভিটামিন এ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। শরীরের বিভিন্ন অস্থির গঠনে ভিটামিন এ এর গুরুত্ব অপরিসীম। ভিটামিন এ এর অভাবজনিত লক্ষণ। এবং ভিটামিন এ এর অভাবজনিত রোগের প্রতিকার সম্পর্কে চলুন বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
ভিটামিন এ এর প্রধান কাজ কি
আমাদের শরীরে ভিটামিন এ একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। আমাদের শরীরে ভিটামিন এ এর প্রধান কাজ হল চোখের দৃষ্টি শক্তি ঠিক রাখা। শরীরের মাংসপেশি, অস্থি, ত্বক, কোষ, দাঁত, এর গঠন ঠিক রাখে। গলা এবং বুকের সংক্রমণ থেকে শরীরকে দূরে রাখে। শরীরের বৃদ্ধি ঠিক রাখে।
শরীরের ক্ষত দ্রুত সারিয়ে তোলা। চোখকে রাতকানা রোগ থেকে দূরে রাখে। ভিটামিন এ এর অভাবে এই সমস্যাগুলো হয়ে থাকে। ভিটামিন এ এর অভাবজনিত রোগের প্রতিকার সম্পর্কে চলুন জেনে নেয়া যাক।
ভিটামিন এ এর অভাবজনিত রোগের প্রতিকার
অনেকেই ভিটামিন এ এর অভাবজনিত রোগে আক্রান্ত। কিন্তু ভিটামিন এ এর অভাবজনিত রোগের প্রতিকার সম্পর্কে তারা জানেন না। ভিটামিন এ এর অভাবজনিত রোগের প্রতিকার এর জন্য অবশ্যই ঔষধ অথবা ভিটামিন এ যুক্ত খাবার গুলো খেতে হবে। নিম্নে ভিটামিন এ যুক্ত খাবারের বিষয়ে আলোচনা করা হলো।
ভিটামিন এ জাতীয় খাবার
অনেকেই জানেন না ভিটামিন এ জাতীয় খাবার গুলো কি কি। কোন খাবারগুলোতে ভিটামিন এ থাকে। কোন খাবারগুলো ভিটামিন এ জাতীয়। নিম্নে ভিটামিন এ জাতীয় খাবারের একটি তালিকা দেওয়া হল।
- যেকোনো ধরনের সবুজ শাকসবজি
- মাছ, মাংস, কলিজা
- ফুলকপি, বাঁধাকপি, মিষ্টি কুমড়া
- টমেটো, গাজর, গাজরের জুস
- ধনেপাতা, সজনে পাতা
- দুধ, ডিম, পনির
- আখরোট, পেস্তা বাদাম, কাজুবাদাম, কাঠবাদাম
- ডালিম, আঙ্গুর
- কাঁচা মরিচ, লাল শাক
- আলু, রসুন
- কড মাছের তেল, ছোট মাছ
- ডিমের কুসুম, ঘি
- কলা, আপেল, আনারস
- কাঁচা আম, এবং পালং শাক
এই খাবারগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ পাওয়া যায়। উল্লেখিত এই খাবারগুলো খেলে ভিটামিন এ এর অভাবজনিত রোগের প্রতিকার নিশ্চিত।
ভিটামিন এ এর অভাবজনিত লক্ষণ
অনেকেই ভিটামিন এ এর অভাবজনিত লক্ষণ সম্পর্কে জানেন না। ভিটামিন এ এর অভাবজনিত লক্ষণ গুলো কি কি, নিচে এই সম্পর্কে বিস্তারিত দেওয়া হলো
- চোখের দৃষ্টিশক্তি কমে যায়
- শরীরের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়
- রাতকানা রোগের দেখা দেয়
- বুকের সংক্রমণ বেড়ে যায়
- গলা ফুলে যায়
- শরীরের মাংসপেশি অধিক দুর্বল হয়ে পড়ে
- গর্ভধারণ এ ব্যাঘাত ঘটায়
- শরীরে খত নিরাময়ে ব্যাঘাত ঘটায়।
- শিশুদের স্বাভাবিক বৃদ্ধির বিঘ্ন ঘটে
- ম্যালেরিয়া ডায়রিয়ার মত সমস্যা দেখা দেয়
- প্রজনন ক্ষমতা কমে যায়
আপনার যদি এই সমস্যাগুলো দেখা দেয় তাহলে আপনাকে বুঝতে হবে আপনার শরীরে ভিটামিন এ এর ঘাটতি রয়েছে। তাহলে আপনাকে ভিটামিন এ এর অভাবজনিত রোগের প্রতিকার করে এ রকম খাবার খেতে হবে।
ভিটামিন এ এর অভাবে কি হয়
ভিটামিন এ এর অভাবে শরীরে অনেক রোগ ব্যাধি দেখা দেয় এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। শরীরের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। মাঝেমধ্যেই শরীর বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। চোখের দৃষ্টিশক্তি কমে যায় এবং রাতকানা রোগের সমস্যা দেখা দেয়।
শিশুদের স্বাভাবিক বৃদ্ধি কমে যায়। শিশুদের ক্ষেত্রে ডায়রিয়া ম্যালেরিয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়। আপনি যদি এই রোগ গুলোই আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে ভিটামিন এ এর অভাবজনিত রোগের প্রতিকার সম্পর্কে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন।
ভিটামিন এ এর অভাবে কোন রোগ হয়
মানব শরীরে ভিটামিন এ এর অভাবে কিছু রোগের লক্ষণ দেখা দেয়। যাদের শরীরে অধিক কম মাত্রায় ভিটামিন এ এর অভাব দেখা দেয় তাদের শরীরে সাধারণ দুর্বলতা বেড়ে যায়। শরীরের প্রজনন ক্ষমতা কমে যায়। শরীরের পেশী দুর্বল হয়ে যায়। ত্বকের শুষ্কতা বৃদ্ধি পায়। যাদের শরীরে অতিরিক্ত মাত্রায় ভিটামিন এ এর অভাব হয় তাদের অন্ধত্ব দেখা দেয়, রাতকানা রোগের দেখা দেয়।
দৃষ্টিশক্তি কমে যায়। শরীরে ক্ষত বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে চোখের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। আপনি যদি চোখের সমস্যার সম্মুখীন হন তাহলে দ্রুত ভিটামিন এ এর অভাবজনিত রোগের প্রতিকার করুন। নতুবা দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলতে পারেন।
ভিটামিন এ এর অভাব কতদিনে ঠিক হয়
সাধারণত ভিটামিন এ এর অভাব হলে ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু যাদের অতিরিক্ত সমস্যা হয় তাদের ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে। সাধারণত অল্প সামান্য বা ছোট ছোট রোগ হলে আপনি ভিটামিন এ জাতীয় খাবার খেলে সাত দিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবেন। কিন্তু যদি রাতকানা, চোখের দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া, প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পাওয়া, গর্ভাবস্থায় বন্ধ্যাত্ব, এবং শরীরে ক্ষতের সৃষ্টি হয় তাহলে এই ভিটামিন এ এর অভাবজনিত রোগের প্রতিকার হতে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে।
ভিটামিন এ এর অভাবে চোখের ক্ষতি হয়
ভিটামিন এ এর অভাবে চোখের ক্ষতি হয় এইটা প্রমাণিত। ভিটামিন এ এর অভাবে চোখের দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া থেকে শুরু করে, চোখের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। যদি কেউ অতিরিক্ত ভিটামিন এ এর অভাবে আক্রান্ত হন তাহলে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলতে পারেন।
ভিটামিন এ এর অভাবে কি কি রোগ হতে পারে
ভিটামিন এ এর অভাবে কি কি রোগ হতে পারে, ভিটামিন এ এর অভাবে বিভিন্ন ধরনের রোগ দেখা দেয় এর মধ্যে ছোট বাচ্চা দের ক্ষেত্রে বৃদ্ধি ব্যাহত হয়, ডায়রিয়া ম্যালেরিয়া হয়, গলা ফোলার মত সমস্যা দেখা দেয়, রাতকানা রোগের দেখা দেয়। বয়স্কদের ক্ষেত্রে চোখের দৃষ্টিশক্তি কমে যায়,
শরীর অতিরিক্ত দুর্বল হয়ে যায়, শরীরের পেশিগুলো দুর্বল হয়ে যায়, প্রজনন ক্ষমতা কমে যায়। গর্ভধারণ এ বন্ধ্যাত্ব হয়। আপনি যদি এই রোগ গুলো স্বীকার হন দ্রুত ভিটামিন এ এর অভাবজনিত রোগের প্রতিকার করুন।
লেখক এর মন্তব্য
অনেকেই ভিটামিন এ এর অভাব সম্পর্কে প্রশ্ন করে থাকেন আজকের আর্টিকেলটি তাদের জন্য। আজকের আর্টিকেলের মধ্যে ভিটামিন এ বিষয়ে সকল প্রশ্নের উত্তর দেয়ার চেষ্টা করেছি। আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হবেন। ভিটামিন এ এর অভাবজনিত লক্ষণ এবং ভিটামিন এ এর অভাবজনিত রোগের প্রতিকার উভয় বিষয়ে ধারণা দেয়া হয়েছে।
আপনি যদি ভিটামিন এ এর অভাবজনিত রোগে আক্রান্ত হন, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন এবং দ্রুত সুস্থ হন। আমাদের আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। এরকম গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পেতে নিয়মিত আমাদের সাইটটি ভিজিট করুন। আরো অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে জানতে আমাদের সাইটের ক্যাটাগরি গুলো ঘুরে আসুন। ধন্যবাদ।