নাক ডাকা বন্ধ করার ব্যায়াম - নাক ডাকার সমস্যা চিরতরে দূর করার উপায়
নাক ডাকা বন্ধ করার ব্যায়াম করলে খুব সহজে নাক ডাকার সমস্যা দূর হয়। নাক ডাকার সমস্যা দূর করার জন্য একাধিক উপায় রয়েছে। নাক ডাকার সমস্যা চিরতরে দূর করার উপায় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত থাকছে আজকের আর্টিকেলটিতে।
অনেক ব্যক্তির অনেক রকম শারীরিক সমস্যা থাকার কারণে নাক ডাকে। নাক ডাকার বিভিন্ন কারণ রয়েছে। নাক ডাকার বিভিন্ন সমস্যা এবং এর সমাধান জানতে হলে আমাদের পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ নাক ডাকা বন্ধ করার ব্যায়াম - নাক ডাকার সমস্যা চিরতরে দূর করার উপায়
.
নাক ডাকার সমস্যা কেন হয়
অনেক ব্যক্তি রয়েছেন ঘুমানোর সময় অধিক শব্দে নাক ডাকে। যদি একত্রে দুইজন অথবা বেশি লোকজনের মধ্যে সে নাক ডাকা ব্যক্তিকে নিয়ে ঘুমানো যায় তাহলে একজনের জন্য কারোর ঘুম হয় না। নাক ডাকার শব্দ এতই বিকট হয় যে এই শব্দের কারণে যে কারোর ঘুম ভাঙতে বাধ্য।
আরো পড়ুনঃ প্রতিদিন স্লিপ প্যারালাইসিস কেন হয়
আপনার যদি কোন সঙ্গীর নাক ডাকার সমস্যা থাকে তাহলে এর সমস্যাগুলো কি কি অবশ্যই আপনি জানেন। নাক ডাকার সমস্যা চিরতরে দূর করার উপায়। নাক ডাকার সমস্যা অনেক কারণে হয়ে থাকে নিম্নের দেয়া হলো
- নাকের হাড় বাঁকা হলে
- নাকের ভেতরের মাংস বৃদ্ধি পেলে
- নাকে পলিপাস হলে
- নাকের ভিতরে টিউমার হলে
- মুখমন্ডলের চর্বি জমা হলে
- জিহ্বার পিছনের অংশে টিউমার হলে
- টনসিলের সমস্যা থাকলে
- শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকলে
- শরীরের ওজন বৃদ্ধি পেলে
- অত্যাধিক পরিশ্রম করলে
উল্লেখিত বিষয়গুলোর কারণে নাক ডাকার সমস্যা লক্ষ্য করা যায়। এই সমস্যাগুলো থেকে একজন মানুষের নাক ডাকার সমস্যা হয়। নাক ডাকার সমস্যা চিরতরে দূর করার উপায় সম্পর্কে জানতে পুরো আর্টিকেলটি পড়ুন।
নাক ডাকা বন্ধ করার ব্যায়াম
নাক ডাকা এমন একটি সমস্যা যে আপনি যদি বিছানায় ঘুমান আর আপনার সঙ্গে যে বিছানায় ঘুমাবে আপনার চাইতে তার অধিক বেশি সমস্যা হবে। নাক ডাকার সমস্যার কারণে আপনার সঙ্গী আপনার প্রতি বিরক্ত বোধ করবে এর জন্য আপনাদের মাঝে দূরত্ব বাড়তে পারে।
আরো পড়ুনঃ ভিটামিন এ এর অভাবজনিত রোগের প্রতিকার
নাক ডাকা বন্ধ করার জন্য আপনি নিয়মিত কিছু ব্যায়াম করতে পারেন যেমন: মুখের চর্বি বৃদ্ধি এবং শ্বাসনালীর জন্য নাকডাকা বৃদ্ধি পায় এজন্য আপনাকে মুখমণ্ডলের ব্যায়াম করতে হবে এবং জিব্বার ব্যায়াম করতে হবে।
নাক ডাকা বন্ধ করার ব্যায়াম ১ জিব্বার ব্যায়াম করার জন্য আপনি মুখ থেকে যতদূর সম্ভব জিহব্বা বাইরে বের করুন। এই রকম দিনে দশবার করুন। এরপর মুখ বন্ধ করে জিহ্বা কে মুখের ভেতরে টেনে নেওয়ার চেষ্টা করুন। এরপর আপনার দুই আঙ্গুল দুই গালে রাখুন এবং আপনার জিওব্বা দিয়ে বারবার দুই গালের সে আঙ্গুল কে ঠেলা দেওয়ার চেষ্টা করুন। এভাবে আপনি নাক ডাকার ব্যায়াম করতে পারেন আশা করি ভালো ফলাফল পাবেন।
নাক ডাকা বন্ধ করার ব্যায়াম ২ নিয়মিত নাকের ছিদ্রে আঙ্গুল দিয়ে দুই দিকে চাপ দিন। এভাবে প্রতিদিন সকালে ও ঘুমাতে যাওয়ার আগে দুই আঙ্গুল দিয়ে নাকের ছিদ্রকে দুই দিকে প্রসারিত করুন।
নাক ডাকা বন্ধ করার ব্যায়াম ৩ নিয়মিত আপনার জিভকে উপরের তালুতে ঘোষুন। নিয়মিত এভাবে সকালে ও সন্ধ্যায় চেষ্টা করুন। এতে আপনার নাকের ছিদ্রকে প্রসারিত করবে নিশ্বাস নিতে সুবিধা হবে।
নাক ডাকা বন্ধ করার ব্যায়াম ৪ নিয়মিত আপনার জিভের পিছনের অংশ দিয়ে মুখে আলতোভাবে চাপ দিন। আপনার জিভকে সামনের দাঁত অবধি আলতোভাবে ঘোরাফেরা করান। এভাবে আপনার নাকের ছিদ্র প্রসারিত হবে এবং নিশ্বাস নিতে সুবিধা হবে। ফলে নাক ডাকা বন্ধ হবে। প্রিয় পাঠক আশা করি নাক ডাকা বন্ধ করার ব্যায়াম সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়েছেন।
নাক ডাকা বন্ধ করার দোয়া
আমরা যারা মুসলিম আছি তারা আল্লাহর প্রতি অনেক বিশ্বাস করি। আর বিশ্বাস করে ইবাদত করলে এর ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। নাক ডাকা বন্ধ করার দোয়া পাঠ করলে অবশ্যই নাক ডাকা ভালো হয়। প্রতিদিন ঘুমানোর আগে নাক ডাকার এই দোয়া পাঠ করুন : আউযুবি কালিমাতিল্লাহি তাম্মাতি মিন শার্রি মা খলাক। প্রতিদিন ঘুমানোর আগে একবার এই দোয়া পাঠ করুন আশা করি উপকার হবে।
নাক ডাকার সমস্যা চিরতরে দূর করার উপায়
নাক ডাকার সমস্যা চিরতরে দূর করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত পড়ুন:
- ধূমপান পরিহার করুন
- অ্যালকোহল পরিহার করুন
- শোয়ার ধরণ পরিবর্তন করুন
- উঁচু বালিশে মাথা রেখে ঘুমান
- চিৎ হয়ে না ঘুমিয়ে কাত হয়ে ঘুমান
- শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমান
- অতিরিক্ত কায়িক পরিশ্রম থেকে বিরত থাকুন
- নিয়মিত সময় মত ঘুমিয়ে পড়ুন
- মসলাযুক্ত খাবার পরিহার করুন
ধূমপান পরিহার করুন
ধূমপান করার কারণে শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা বেড়ে যায় আর শ্বাস নিতে সমস্যা হলে নাক ডাকার সমস্যা বৃদ্ধি পায় এইজন্য আপনাকে ধূমপান পরিহার করতে হবে। ধুমপান করলে টারবাইনেটস নামের টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত হয় যা নাকডাকা বৃদ্ধি করে।
আরো পড়ুনঃ ক্যালসিয়ামের অভাব হলে কি খাওয়া উচিত
শোয়ার ধরন পরিবর্তন করুন আপনি যেভাবে ঘুমালেন নাক ডাকে সেইভাবে ঘুমাবেন না। ডাক্তারদের মতে আপনাকে কাত হয়ে ঘুমাতে হবে তাহলে নাক ডাকার পরিমাণ কিছুটা কমে যাবে। উঁচু বালিশে মাথা রেখে ঘুমান উঁচু বালিশে মাথা রেখে ঘুমালে শ্বাস নিতে সুবিধা হয় শ্বাস নিতে সুবিধা হলে আপনার নাক ডাকা দূর হবে।
শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমান কারণ শরীরের অতিরিক্ত ওজন থাকলে শ্বাস প্রশ্বাস নিতে সমস্যা হয়। যার জন্য আপনার নাক ডাকা সমস্যা বৃদ্ধি পায়। অতিরিক্ত কায়িক পরিশ্রম থেকে বিরত থাকা অতিরিক্ত কায়িক পরিশ্রম করলে আপনার শরীর অধিক দুর্বল হয়ে পড়বে যার জন্য আপনার নাক ডাকা বৃদ্ধি পাবে।
নিয়মিত সময়মতো ঘুমিয়ে পড়ুন কেননা ঘুমের সময় পরিবর্তন করলে নাক ডাকার সমস্যা বৃদ্ধি পায়। তাই আপনার ঘুমের সময় হলে ঘুমিয়ে পড়ুন। প্রিয় পাঠক আশা করি নাক ডাকার সমস্যা চিরতরে দূর করার উপায় সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন।
মানুষ ঘুমের সময় নাক ডাকে কেন
মানুষের ঘুমের সময় নাক ডাকার অনেক কারণ রয়েছে। অনেক ব্যক্তির বিভিন্ন রকম সমস্যা থাকার কারণে ঘুমের মধ্যে নাক ডাকে। আপনার যদি ঘুমের মধ্যে নাক ডেকে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনাকে জানতে হবে না কেন ডাকে কি কি কারণে নাক ডাকে। নাক ডাকার সমস্যা চিরতরে দূর করার উপায় গুলো জানলে নাক ডাকা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
কিছু লোকের নাকে পলিপাসের কারণে নাক ডাকে। অনেকের নাকের মাংস বৃদ্ধি পায় নাকের মাংস বৃদ্ধি পেলে শ্বাস-প্রশ্বাসের যাওয়া-আসা বিঘ্ন ঘটে এর ফলে নাক ডাকে। মুখমণ্ডলের ভেতরে চর্বি জমা হলে শ্বাসনালী চিকন হয়ে যায় এর ফলে নাক ডাকা বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকলে নাক ডাকা বৃদ্ধি পায়।
প্রতিদিন রাতে নাক ডাকা কি স্বাভাবিক
অনেকে জানতে চান প্রতিদিন রাতে নাক ডাকা কি স্বাভাবিক। আসলে নাক ডাকা এক ধরনের সমস্যা ও রোগ। নাক ডাকার কারণে আরো অন্যান্য সমস্যা সৃষ্টি হয়। যদি আপনার নাক ডাকে তাহলে অলসতা না করে নাক ডাকার সমস্যা চিরতরে দূর করার উপায় হয়ে সম্পর্কে জানুন এবং নাক ডাকা দূর করুন।
নাক ডাকা স্বাভাবিক নয় এতে আপনার সঙ্গী আপনার সাথে ঘুমাতে অপছন্দ করবে। নাক ডাকার সময় মুখ খোলা থাকে এর ফলে মুখ দিয়ে নিঃশ্বাস যাওয়া আসার সময় আপনার মুখ শুকিয়ে যাবে। নাক ডাকার সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে থাকলে শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। তাই নাক ডাকার স্বাভাবিক নয়। যদি প্রতিদিন রাতে নাক ডাকে সে ক্ষেত্রে আপনি নাক ডাকা বন্ধ করার ব্যায়াম করুন আশা করি সমস্যা দূর হবে।
নাক ডাকা কি ভালো
অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে নাক ডাকা কি ভালো। সাধারণত কমবেশি প্রত্যেকটি লোকেরই ঘুমানোর সময় নাক ডাকে। আসলে নাক ডাকে সমস্যার কারণে। তাহলে যদি সমস্যার কারণে নাক ডাকে তাহলে নাক ডাকা ভালো নয়। বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার কারণে নাক ডাকে নাকের সমস্যা থাকলে নাক ডাকে শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকলে নাক ডাকে। নাকের মাংস বৃদ্ধি পেলে নাক ডাকে। তাই নাক ডাকা ভালো নয়।
রাতে ঘুমানোর সময় নাক ডাকে কেন
অনেকের অনেক সমস্যার কারণে রাতে ঘুমানোর সময় নাক ডাকে। এক এক ব্যক্তির ভিন্ন ভিন্ন কারণে নাক ডাকতে পারে। অতিরিক্ত পরিশ্রম করলে ঘুমানোর সময় নাক ডাকতে পারে। ঘুমানোর সময় উপুড় অথবা চিৎ হয়ে ঘুমালে নাক ডাকতে পারে। ঘুমানোর সময় কাত হয়ে ঘুমালে নাক ডাকেনা। শ্বাস প্রশ্বাস জনিত সমস্যা এবং যাদের স্লিপঅপেনিয়া রয়েছে তাদের ঘুমানোর সময় নাক ডাকে। নাক ডাকার সমস্যা চিরতরে দূর করার উপায় সম্পর্কে জেনে আপনার নাক ডাকা দূর করতে পারেন।
রাতে কি খেলে নাক ডাকা বন্ধ হয়
নাকের বিভিন্ন সমস্যা এবং শারীরিক সমস্যার কারণে নাক ডাকে। এ সমস্যাগুলো দূর করার জন্য শারীরিক সমস্যা অনুযায়ী আপনি খাবার খেতে পারেন। প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে চা এর সাথে মধু খেতে পারেন মধু খেলে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল ও ইনফ্লেমেটরি যা আপনার শ্বাসনালী কে পরিষ্কার করতে সাহায্য করবে। আপনার শ্বাসনালী পরিষ্কার থাকলে নাক ডাকা দূর হবে। তাই রাতে ঘুমানোর আগে মধু এবং চা খান।
লেখক এর মন্তব্য
অনেকে নাক ডাকা বন্ধ করার ব্যায়াম ও নাক ডাকার সমস্যা চিরতরে দূর করার উপায় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন। আজকের আর্টিকেলটি তাদের উদ্দেশ্যে লেখা। বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার কারণে নাক ডাকে। আসলে নাক ডাকা একটি শারীরিক সমস্যা। নাক ডাকার ফলে নিজের সঙ্গী বিরক্ত বোধ করেন। নাক ডাকার সমস্যা চিরতরে দূর করার উপায় সম্পর্কে জানলে নাক ডাকা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তবে আপনার যদি নাক ডাকে তবে অবশ্যই চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন।
কেননা একমাত্র চিকিৎসকই আপনার সঠিক বিষয় জেনে আপনাকে সঠিক পরামর্শ দেবে। আপনার যদি আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে অবশ্যই আর্টিকেলটি শেয়ার করুন এরকম গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পেতে নিয়মিত আমাদের সাইটটি ভিজিট করুন। এবং অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে জানতে আমাদের ক্যাটাগরি গুলো ঘুরে আসুন। ধন্যবাদ।