পিঁপড়ার শারীরিক গঠন - পিঁপড়া সম্পর্কে সকল তথ্য
পিঁপড়ার শারীরিক গঠন দেখতে কেমন হয়। পিঁপড়ার শরীরে কি কি থাকে পিঁপড়ার শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ গুলো কেমন। পিঁপড়ার কয়টি নাক আছে পিঁপড়া সম্পর্কে থাকছে সকল তথ্য।
পিঁপড়া বা পিপীলিকা সাধারণত কিট বা পোকা। পিঁপড়া দেখতে বোলতা ও মৌমাছির মত। পুরো পৃথিবীতে পিঁপড়ার প্রজাতি রয়েছে প্রায় ২২ হাজারেরও বেশি। কিন্তু পুরো পৃথিবীতে শ্রেণীবিন্যাস করেছে প্রায় ১৫,৭০০ টিরও বেশি পিঁপড়া যে কোন আবহাওয়াতে এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে বেঁচে থাকতে পারে এজন্য পিঁপড়ার হাজার হাজার প্রজাতি পৃথিবীর সৃষ্টি লগ্ন থেকেই বেঁচে আছে।
পোস্ট সূচিপত্রঃ পিঁপড়ার শারীরিক গঠন পিঁপড়া সম্পর্কে সকল তথ্য
.
পিঁপড়ার বৈজ্ঞানিক নাম
পিঁপড়ার বৈজ্ঞানিক নাম হল ফর্মিসিডি (Formicidae)। পিঁপড়া সাধারণত পোকা ও কিড়ে এর অন্তর্ভুক্ত। পিঁপড়ে দেখতে বোলতা ও মৌমাছির মতো শরীর বিশিষ্ট এবং সরু কোমর যুক্ত ছোট্ট একটি কিট। তবে পিঁপড়ে সাধারনত হাইমেনপ্টেরার (Hymenoptera) প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত। পিঁপড়ে অনেক ক্ষুদ্র প্রজাতির একটি ছোট্ট কীট।
পিঁপড়ার কয়টি পা আছে
পিঁপড়ে অনেক ক্ষুদ্র প্রজাতির হওয়ার কারণে পিঁপড়ের কয়টি পা আছে সেটি সাধারণ চোখে দেখা যায় না। সাধারণ চোখে দেখা গেলেও সঠিকভাবে পিঁপড়ার পা কয়টি সে বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। একটি পিঁপড়ার মোট তিন জোড়া পা থাকে। পিঁপড়ার পায়ের সংখ্যা মোট ৬টি।
পিঁপড়ার খাদ্যাভ্যাস
পিঁপড়া সাধারণত সব ধরনের খাবার খায় তবে পুরো পৃথিবীতে মোট যা প্রজাতি রয়েছে খাবারের দিক থেকে এইগুলো দুইটি ভাগে বিভক্ত
মিষ্টি পিঁপড়াঃ মিষ্টি পিঁপড়া সাধারণত সকল ধরনের মিষ্টি জাতীয় খাবার খেয়ে থাকে। এরা খুব দূর থেকেও তাদের এন্টেনার মাধ্যমে মিষ্টি জাতীয় খাবারের ঘ্রাণ পায়। তারা মিষ্টি খাবার খাওয়ার জন্য অনেক পরিশ্রম করে। এরা প্রতিদিন সংগ্রহীত খাবার খাওয়ার পরেও পরবর্তী সময়ের জন্য খাবার সংরক্ষণ করে রাখে।
মাংসাশী পিপড়াঃ মাংসাশী পিপড়া উত্তর আমেরিকাতে এবং আফ্রিকাতে দেখা যায়। এরা সকল ধরনের পশু ও জীবিত যে কোন কিছুর মাংস খেয়ে থাকে। এরা সব সময় মৃত কোন কিছুর মাংস খেলেও খাদ্য সংকটের সময় যেকোনো জীবিত মানুষ অথবা পশুর উপরে আক্রমণ করে।
পিঁপড়ার শারীরিক গঠন
পিঁপড়া অনেক ছোট হওয়ায় সাধারণ চোখের মাধ্যমে পিঁপড়ার শারীরিক গঠন পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হয় না। পিঁপড়ার শরীরে মাথা, মাথায় দুইটা চোখ মুখে দুইটা এন্টেনা, এবং সামনে দুইটি বড় দাঁত, সহ তিন জোড়া মোট ৬ টি পা শক্ত আবরণ বিশিষ্ট ঘাড় ও সোরু কোমর রয়েছে। পিঁপড়ের শরীরে চাইতে ঘাড়ে প্রচুর পরিমাণে শক্তি রয়েছে,
তাই সে শরীরের তুলনায় মুখে অনেক ভারী খাবার বহন করতে পারে। পিঁপড়ে তার মাথার দুইটা এন্টেনার সাহায্যে ও নাকের মাধ্যমে খাবারের ঘ্রাণ পেয়ে থাকে। এবং তার মুখের প্রচন্ড শক্ত দাঁত দিয়ে যে কোন খাবার কেটে খেতে পারে।
পিঁপড়ার কয়টি নাক আছে?
পিঁপড়ার কয়টি নাক আছে সে বিষয়ে সকলে অবগত নয়। কেননা এটি সাধারণ চোখে দেখা যায় না। পিঁপড়ার শারীরিক গঠন এর মধ্যে পিঁপড়ার নাক অন্যতম। পিঁপড়ার ৫টি নাক রয়েছে। পিঁপড়া নাকের মাধ্যমে যে কোন খাবারে ঘ্রাণ পর্যবেক্ষণ করে। এবং খুব দ্রুত সে খাবারের কাছে পৌঁছাতে সক্ষম হয়।
পিঁপড়ার বাসার ধরন
পিঁপড়ার বাসার ধরন সাধারণত দুই রকমের লক্ষ্য করা যায় কিছু প্রজাতির পিঁপড়া গাছের ছিদ্র, গাছের পাতা জোড় করে বাসা তৈরি করে। এবং কিছু জাতের পিঁপড়া মাটির নিচে ছোট ছিদ্র করার মাধ্যমে হাজারো ছিদ্র যুক্ত বাসা তৈরি করে। পিঁপড়ার শারীরিক গঠন অনুযায়ী বাসার আকার প্রকাশ পায়।
পিঁপড়ার কয়টি চোখ আছে
পিঁপড়ার দুইটি চোখ রয়েছে কিন্তু পিঁপড়ার কোন চোখের পাতা নেই। পিঁপড়ার চোখের পাতা নেই বিধায়
পিঁপড়া চোখ বন্ধ করতে পারে না। পিঁপড়ার যেহেতু গর্তের মধ্যে ঘুমায় সে ক্ষেত্রে পিঁপড়ার ঘুমের কোন সমস্যা হয় না। পিঁপড়ার শারীরিক গঠন অনুযায়ী পিঁপড়ার চোখ দেখতে অনেক সুন্দর।
পিঁপড়ার প্রজনন
পিঁপড়ার প্রজননের ব্যবস্থা সাধারণত অনেক জটিল। পিঁপড়ার প্রজনন ও বংশবৃদ্ধির জন্য পিঁপড়েদের মধ্যে রানী পিঁপড়া বংশবৃদ্ধি করেন। অন্যান্য সাধারণ পুরুষ ও কর্মী পিঁপড়ার চাইতে রানী পিঁপড়ার শারীরিক গঠন অনেক বড় হয়। একটি রানী পিঁপড়া ডিম দেওয়া থেকে শুরু করে পিঁপড়া জন্ম নেওয়া পর্যন্ত খেয়াল রাখেন। পুরুষ পিঁপড়া রানী পিঁপড়ার সাথে প্রজননের ফলে রানী পিঁপড়া ডিম নিষিক্ত করে। পুরুষ পিঁপড়া রানী পিঁপড়ার চাইতে ছোট এবং কর্মী পিঁপড়ের চাইতে বড় হয়।
পিঁপড়ার ডিম
পিঁপড়ের বংশবৃদ্ধির জন্য পিঁপড়ার ডিম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। রানী পিঁপড়া ডিম পাড়ে এবং ড়িম থেকে বাচ্চা উৎপাদন হয়। তবে সাধারণত কিছু সংখ্যক লোক বর্তমানে পিঁপড়ের ডিমকে মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহার করছে। এর ফলে পিঁপড়ের বংশবৃদ্ধি এবং বিস্তার ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
পিঁপড়ার বাসস্থান
পিঁপড়ার বাসস্থান সাধারণত দুই রকমের হয়ে থাকে। কিছু পিঁপড়া গাছ, পাতা, ডালের মধ্যে ছিদ্র করে বাসা তৈরি করে, এবং কিছু পিঁপড়ে মাটির নিচে ছোট ছোট ছিদ্র তৈরি করে বাসা তৈরি করে। তবে পিঁপড়ার শারীরিক গঠন অনুযায়ী বাসস্থানের প্রকারভেদ রয়েছে। তবে পিঁপড়ার বাসস্থান অনেক শুকনো এবং পরিষ্কার।
পিঁপড়ার গড় আয়ু কত
পিঁপড়ার শারীরিক গঠন অনুযায়ী পিঁপড়ার বিভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে। প্রজাতি ভেদে পিঁপড়ার আয়ু কাল কম বেশি হয়। তবে একটি পিঁপড়ার গড় আয়ু ৪৫ থেকে ৬০ দিন এর মত হয়। তবে কর্মী পিঁপড়ার চাইতে রানী পিপড়া বেশি দিন বাঁচে।
পিঁপড়ার জীবন চক্র
পিঁপড়ার জীবনচক্র খুব সুন্দর। একটি পিঁপড়া ডিম ফুটে জন্মগ্রহণ করার পর খাবার সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। সাধারণত অধিকাংশ পিঁপড়া কর্মী পিঁপড়ার অন্তর্ভুক্ত হয়। পিঁপড়া তাদের জীবনের অধিকাংশ সময় তাদের বাসস্থান তৈরি করে এবং খাবার সংগ্রহ করে জীবন অতিবাহিত করে। পিঁপড়ার শারীরিক গঠন অনুযায়ী তারা কর্মী পদে নিয়োজিত হয়।
পিঁপড়ার ডাক
পিঁপড়ার সাধারণত ডাক বা শব্দভঙ্গি নেই। পিপড়ার ভাষা এবং চলাচলের জন্য তারা এন্টেনাকে কাজে লাগাই। পিপড়ার কাছে রয়েছে ফেরোমেন নামক একপ্রকার তরল পদার্থ এই পদার্থকে তারা কাজে লাগিয়ে একে অন্যকে খুঁজে বের করতে সক্ষম হয়।
লেখক এর মন্তব্য
আজকে পিঁপড়ার শারীরিক গঠন এবং পিঁপড়া সম্পর্কে সকল তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি। অনেকেই পিঁপড়া বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করে থাকেন আজকের আর্টিকেলটি তাদের উদ্দেশ্যে লেখা। পিঁপড়া বিষয়ে আরো অন্য কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে প্রিয় জনদের সাথে শেয়ার করুন। এ রকম গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পেতে নিয়মিত আমাদের সাইটটি ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।