বাঘের শারীরিক গঠন - বাঘ সম্পর্কে অজানা কিছু তথ্য

বাঘের শারীরিক গঠন কেমন হয়, বাঘ সম্পর্কে অজানা কিছু তথ্য আজকে আপনাদের মাঝে শেয়ার করব। বাঘের বিভিন্ন জাতের মধ্যে ওল বাঘের বর্ণনা সম্পর্কে বিস্তারিত দেওয়া হল।
বাঘের শারীরিক গঠন - বাঘ সম্পর্কে অজানা কিছু তথ্য
বাঘের শারীরিক গঠন অনেক সুন্দর আকৃতির বাংলাদেশ ছাড়াও পৃথিবীর আরো ছয়টি দেশে বাঘ জাতীয় পশুর স্থান দখল করে আছে। বাঘের অনেক প্রজাতি রয়েছে বাঘের প্রজাতি অনুযায়ী এদের আকৃতি ও শারীরিক গঠন লক্ষ করা যায়। 

পোস্ট সূচিপত্রঃ বাঘের শারীরিক গঠন বাঘ সম্পর্কে অজানা কিছু তথ্য

.

ভূমিকাঃ

বাঘ একটি বড় বিড়াল প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী। বাঘ দেখতে সাধারনত অনেক সুন্দর এবং আকর্ষণীয় হয়ে থাকে। বাঘ সবসময় শিকার করে খায়। এরা জীবন্ত পশু স্বীকার করে খেতে পছন্দ করে। বাঘ সাধারণত বড় শিকারি প্রাণীর উদাহরণ। দক্ষিণ এশিয়ার অঞ্চল গুলোতে এবং আফ্রিকার মধ্যে সবচাইতে বেশি বাঘ দেখা যায়। বাঘ সম্পর্কে অজানা কিছু তথ্য জানতে পুরো আর্টিকেলটি পড়ুন।

বাঘের বৈজ্ঞানিক নাম

বাঘ স্তন্যপায়ী Panthera tigris বড় বিড়াল জাতের একটি প্রাণী। বাঘের বৈজ্ঞানিক নাম (Panthera tigris) বাঘ অনেক বড় আকৃতির অত্যন্ত শক্তিশালী এবং হিংসুটে প্রকৃতির প্রাণী। বাঘ বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রাণীর অন্তর্ভুক্ত।

বাঘের আকৃতি কেমন

বাঘের প্রজাতি ভেদে এর আকৃতি লক্ষ্য করা যায়। বাঘের অনেক প্রজাতি রয়েছে। আমরা যে বাঘটি সচরাচর দেখে থাকি সেটা সাইবেরিয়ান বেঙ্গল টাইগার। সাইবেরিয়ান বাঘ সবচাইতে বড় আকৃতির হয়ে থাকে। একটি পূর্ণবয়স্ক বাঘ ৩.৩ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয় যা ১১ ফিট এর সমান। ওজনের ৩০০ কিলোগ্রাম এবং ৬৬০ পাউন্ড এর সমান হয়। একটি পূর্ণবয়স্ক বাঘিনী ১৪০ কিলোগ্রাম ওজনের হয়। তবে বিভিন্ন প্রজাতির বাঘের বিভিন্ন আকৃতি হয়ে থাকে।

বাঘের আবাসস্থল কোথায়

বাঘের প্রজাতি অনুযায়ী এর আবাসস্থল লক্ষ্য করা যায়। বাঘ সাধারণত দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে, মিয়ানমার, ভুটান, নেপাল, বাংলাদেশ এবং ভারতে দেখা যায়। বাঘের আবাসস্থল ঘন বন জঙ্গলে যেখানে তাদের প্রয়োজনীয় শিকারের ব্যবস্থা রয়েছে। যেখানে বাঘের খাবার সংগ্রহে বিলম্ব না হয় না এমন অঞ্চলে বাঘের আবাসস্থল গড়ে ওঠে।

বাঘের শারীরিক গঠন

ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির বাঘের শারীরিক গঠন ভিন্ন ভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। তবে সবচাইতে সুন্দর বড় এবং আকর্ষণীয় প্রজাতির বাঘ হচ্ছে সাইবেরিয়ান বাঘ যা বেঙ্গল টাইগার নামে পরিচিত। একটি পূর্ণবয়স্ক বাঘ ১৩ ফুট (২৯৬) কেজি ৬৫০ পাউন্ড হয়। বাঘের তুলনায় বাঘিনীদের আকার এবং ওজন কম হয়। একটি পূর্ণবয়স্ক বাঘিনী (৪৮০) পাউন্ড ২১৮ কেজি পর্যন্ত হয়। 
বাঘের-শারীরিক-গঠন-বাঘ-সম্পর্কে-অজানা-কিছু-তথ্য
বাঘের শরীর লম্বা এবং প্রশস্ত। লম্বাই এরা ১৩ ফুট পর্যন্ত হয়। বাঘের পুরো শরীর লোমে আবৃত। বাঘের একটি লেজ রয়েছে যা ৩.৩ ফুট ১ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। বাঘের দুইটি চোয়ালসহ ৩০টি ধারালো দাঁত রয়েছে। বাঘের পায়ে অত্যন্ত ধারালো নখ রয়েছে যা স্বীকার ধরার কাজে ব্যবহার হয়। বাঘের দৃষ্টিশক্তি অনেক প্রখর। বাঘ তার চোখের মাধ্যমে মানুষের চাইতে ছয় গুণ বেশি পরিষ্কার এবং স্পষ্ট দেখতে পায়।

ওল বাঘের বর্ণনা

ওল বাঘ সাধারণত সাদা অথবা ধূসর রংয়ের হয়ে থাকে। এদের শরীরে কালো ডোরাকাটা দাগ দেখা যায়। ওল বাঘের বৈজ্ঞানিক নাম (Panthera tigris) এরা বর্ণ সংকর বেঙ্গল প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত। ওল বাঘের শরীরে ফিওমেলানিনের অনুপস্থিতির কারণে এদের রং ধূসর এবং সাদা বর্ণের হয়। এরা দেখতে ধূসর এবং সাদা হওয়ায় দেখতে অনেক আকর্ষণীয় লাগে।

বাঘের বাসার ধরন

বাঘ সাধারণত পাহাড়ের গুহা, বড় গাছের কোঠোরে, অথবা বড় পাথরের মাঝখানে ফাঁকা অংশে বাসা তৈরি করে। বাঘের শারীরিক গঠন অনুযায়ী বাসস্থান লক্ষ্য করা যায। তবে বনে বিচরণকারী বাঘ সাধারণত গাছের গোড়ায় অথবা পাহাড়ের ধারে হালকা মাটি সরিয়ে বাসা তৈরি করে।

মেছো বাঘের বৈশিষ্ট্য

মেছো বাঘ সাধারণত ছোট আকৃতির হয়ে থাকে। মেছো বাঘের গায়ে ছোট ছোট ছোপ ছোপ কালো দাগ দেখা যায়। মেছো বাঘের শারীরিক গঠন অনেক সুন্দর মেছো বাঘ জলাভূমি, ম্যানগ্রোভ, বিভিন্ন নদী, এবং হাওরের পাশে বসবাস করে। এরা সবচাইতে পানি থেকে বেশি খাবার সংগ্রহ করে। মেছো বাঘ সাঁতারেও অনেক পারদর্শী হয় বিধায় এরা পানিতে খুব সহজে স্বীকার করতে পারে। মেছো বাঘ দেখতে কিছুটা চিতা বাঘের মত। তবে চিতা বাঘের চাইতে এরা আকারে অনেক ছোট হয়।

বাঘের দুধের উপকারিতা

অন্যান্য পশুর মত বাঘের দুধেও পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে। তবে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বাঘের দুধের অযথা গুজব রোটিয়ে অধিক অর্থ আয় করেন। অনেকের মধ্যে ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে যে বাঘের দুধ খেলে নাকি বাঘের মত শক্তিশালী এবং ক্ষমতাবান হওয়া যায়। আসলে এই কথার কোন বাস্তব প্রমাণ নেই। মানুষ যদি বাঘের দুধ খেলে বাঘের মত শক্তিশালী হত তাহলে প্রত্যেকেই তো গরুর দুধ খায় সেক্ষেত্রে সবাইকে গরুর মত বোকা হওয়া উচিত ছিল।

বাঘের সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণ কি

বাঘের সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণ হল বাঘের শারীরিক গঠন ও বংশবিস্তার। আমাদের দেশে বাঘ তুলনামূলক কম বাচ্চা জন্ম দেয় এর ফলে বাঘের বংশবিস্তার কমে যাচ্ছে। অন্যদিকে খাদ্যের অভাবে বাঘ অনেক দুর্বল হয়ে পড়ছে এর ফলে বাঘ প্রজনন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে ফলে তুলনামূলক বংশবিস্তার করতে পারছে না। কিছু অসাধু শিকারি চক্র বাঘ স্বীকার করে বিদেশে রপ্তানি করছে এর ফলে বাঘের সংখ্যা কমে যাচ্ছে।

বর্তমানে বাঘের সংখ্যা কত

বাঘের শারীরিক গঠন অনুযায়ী বাঘের জাত নির্বাচন করা হয়। আমাদের বাংলাদেশ যে বাঘ গুলো দেখতে পাওয়া যায় সেগুলো বেঙ্গল প্রজাতির বাঘ। সর্বশেষ ২০২৩ তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে বাঘের সংখ্যা ১১৪ টি। তবে পরবর্তীতে বাঘের সংখ্যা জানা যাবে ২০২৪ সালের ২৯ জুলাই এর পর।

উপসংহার

বাঘ অত্যন্ত সুন্দর একটি প্রাণী দেখতে অনেক চমৎকার। বাঘ আমাদের দেশের জাতীয় পশু। বাঘের শারীরিক গঠন অত্যন্ত আকর্ষণীয়। অনেকেই বাঘ সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্ন করে থাকেন আজকের আর্টিকেলটি তাদের উদ্দেশ্যে লেখা। আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হবেন। আজকে বাঘ বিষয়ে অজানা কিছু তথ্যের উত্তর দিয়েছি। আর্টিকেলটি যদি ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করুন। এ রকম গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পেতে নিয়মিত আমাদের সাইটটি ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

প্রিয় টপিকের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url